পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। বোলপুরের সিয়ান মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েতের ডিহিপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
১০০ দিনের প্রকল্পের বকেয়া টাকা আটকে রাখা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ বন্ধ নিয়ে শনিবার সিউড়িতে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। রবিবার সেই আবাস যোজনার বাড়ি করার সময়ে এলাকার তৃণমূল নেতাদের টাকা দিতে হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করলেন বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের সিয়ান মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ডিহিপাড়া এলাকার গ্রামবাসীদের একাংশ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
শনিবার সিউড়ি থেকে কেন্দ্রীয় দলটি বোলপুরে ফিরে আসে। এ সকালে দুই সদস্যের দলটি ডিহিপাড়ায় যায়। ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ ও ২০২১-২২—এই তিন অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তৈরি হওয়া বাড়িগুলি কাদের নামে এসেছিল, প্রাপকেরা সেই বাড়ি পেয়েছেন কি না, গ্রামবাসীরা বাড়ি তৈরির সম্পূর্ণ অর্থ পেয়েছেন কি না, বাড়িতে শৌচালায় আছে কি না, তা করে দিতে কোনও টাকা দিতে হয়েছে কি না— এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে থাকেন তাঁরা। উপস্থিত ছিলেন বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস, বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নোডাল অফিসার তন্ময় পাতিল-সহ বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকেরা।
এখানেই গ্রামবাসীদের একাংশ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছে আবাস যোজনার বাড়ি না-পাওয়ার অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে আবাস যোজনার বাড়ি করার সময়ে এলাকায় তৃণমূল নেতাদের টাকা দিতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের আরও অভিযোগ, যাঁরা বাড়ি পায়নি তাঁদের খোঁজ করা হচ্ছে না। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, আবাস যোজনা বাড়ি পাওয়ার জন্য প্রায় তাঁদের বাড়ি পিছু ১০,০০০ টাকা করে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দিতে হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসীদের অনেকেই বলেন, “টাকা না দিলে বাড়ি হবে না বলেছিল। তাই বাধ্য হয়ে তখন আমরা বাড়ির জন্য টাকা দিয়েছি। এই বিষয়টি এ দিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে আমরা জানিয়েছি।’’
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা বাস্তবটাই তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছে। কারণ তৃণমূল টাকা ছাড়া কোনও কাজই করে না। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘এটা যে তাঁরা প্রকাশ্যে বলতে পারছে তা ভবিষ্যতের জন্য একটা ভাল দিক।’’
বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের কাজী মহম্মদ হানিফ বলেন, ‘‘আমি বাইরে ছিলাম। তাই কী হয়েছে আমার জানা নেই।’’ সিয়ান মুলুক এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ আনউয়ারুল ইসলাম বলেন, “ আমি কিছু দিন আগে অঞ্চল সভাপতি দায়িত্বে এসেছি। আগে কী হয়েছে বলতে পারব না।” তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে সত্যিই যদি এমন অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
এর পর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলটি বাহিরি পাঁচশোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছোট শিমুলিয়া গ্রামটিও এদিন পরিদর্শন করেন। বোলপুর-শ্রীনিকেতনের বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, “গত দুদিন ধরে কেন্দ্রীয় দলকে আমরা সব রকম ভাবে সাহায্য করেছি।” প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আজ, সোমবার, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের জেলা ছাড়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy