সাঁইতোড়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
টানা সাত বছরের লড়াই। এলাকায় একটা প্রাথমিক স্কুল চেয়ে ব্লক স্তর থেকে জেলা স্তরে স্কুল শিক্ষা দফতরের একাধিক বার আবেদন নিবেদন জানিয়েছেন গ্রামবাসী। স্মারকলিপি দেওয়া থেকে ধর্না, পথ অবরোধ, অবস্থান-বিক্ষোভও করেছেন একাধিক বার। অবশেষে আন্দোলনের সুফল পেলেন বাঁকুড়ার সারেঙ্গার সাঁইতোড়া গ্রামের বাসিন্দারা। চলতি মাসের ২২ তারিখে তাঁদের এলাকায় স্কুল তৈরির অনুমোদনপত্র এসে পৌঁছয় সারেঙ্গা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের হাতে। মঙ্গলবার স্কুল চালুর আনুষ্ঠানিক সূচনা হল। জানানো হল, পড়ুয়াদের ভর্তিও নেওয়া হবে শীঘ্রই। তৃপ্তির হাসি ফুটল গ্রামবাসীর।
বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন আপাতত গ্রামের একটি ক্লাবে স্কুলটি চলবে। এক জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। করোনা-পরিস্থিতি কেটে স্বাভাবিক ভাবে স্কুল চালু হলে, এখানে মিড-ডে মিল থেকে সব রকম সুবিধা দেওয়া হবে।’’
এ দিন ওই সূচনা অনুষ্ঠানে ছিলেন সারেঙ্গা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সোনালি মুর্মু, সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুভাষ মাইতি, চিলতোড় পঞ্চায়েতের প্রধান শুভেন্দু মুর্মু, প্রমুখ।
সারেঙ্গা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বলেন, ‘‘গ্রামবাসীর দাবি অনুযায়ী, সারেঙ্গায় আমার তিন বছরের কর্ম জীবনে তিন-চার বার এখানে পরিদর্শন এসেছি। এই গ্রামে সত্যিই একটি প্রাইমারি স্কুলের খুব প্রয়োজন ছিল। সেই রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছিলাম। অবশেষে ওই গ্রামে নতুন স্কুলের অনুমোদন আসায় আমিও ব্যক্তিগত ভাবে খুশি হয়েছি।’’ তিনি জানান, এ বার স্কুলে পড়ুয়া ভর্তির কাজ চলবে।
গ্রামবাসীর লড়াই যখন শুরু হয়েছিল, সে সময়েই স্কুলভবনের জন্য এক বিঘা জমি দান করেছিলেন এই গ্রামেরই বাসিন্দা রাধানাথ সনগিরি। তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর দান করা জমিতেই স্কুল ভবন তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক।
সাঁইতোড়া গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ সনগিরি, বগলাপ্রসাদ সনগিরি, দেবীপ্রসাদ সনগিরি, স্বরূপ সনগিরিরা জানান, তাঁদের গ্রাম থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে খালুইমুড়া নিম্নবুনিয়াদি বিদ্যালয়। কিন্তু ওই স্কুলে যেতে খুদে পড়ুয়াদের দু’টি খাল, বড় ফাঁকা মাঠ, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম ৯ নম্বর রাজ্য সড়ক পেরিয়ে যেতে হত। সে জন্য শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে উদ্বেগে থাকতে হত অভিভাবকদের।
তাই গ্রামেই স্কুল চেয়ে ২০১৩ সাল থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামে ৩০ জন প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া আছে। এই স্কুল চালু হলে শুধু সাঁইতোড়া গ্রামের বাচ্চারা নয়, পাশের দেউলি গ্রামের ছেলেমেয়েদের একাংশও এখানে পড়তে আসবে।’’
স্থানীয় অভিভাবক রামপ্রসাদ সনগিরি, দেবশ্রী মিশ্র বলেন, ‘‘এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। শিক্ষক এলেই বাচ্চাদের গ্রামের স্কুলে ভর্তি করাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy