(বাঁ দিকে) সিপিএমের প্রয়াত নেতা বাসুদেব আচারিয়া। (ডান দিকে) বাসুদেবের মৃতদেহে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল। —নিজস্ব চিত্র।
জন্ম পুরুলিয়ায়। সাংসদ ছিলেন বাঁকুড়ার। তাই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দুই জেলাতেই নিয়ে যাওয়া হল বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তথা বাঁকুড়ার ন’বারের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার দেহ। সোমবার দুপুরে তেলঙ্গানার হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন বাসুদেব। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। মঙ্গলবার বিমানে করে হায়দরাবাদ থেকে বাসুদেবের দেহ কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। বুধবার সকালে কলকাতা থেকে বাঁকুড়া নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর দেহ। বর্ষীয়ান সিপিএম নেতার দেহ বুধবার সকালে বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে পৌঁছলে সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় সিপিএম-সহ বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতৃত্বকে। প্রাক্তন সাংসদকে শেষ দেখা দেখতে অগনিত মানুষের ঢলও চোখে পড়ল।
বুধবার সাড়ে ১১টা নাগাদ বাঁকুড়া শহর লাগোয়া পুয়াবাগান মোড়ের কাছে কিছুক্ষণের জন্য প্রাক্তন সাংসদের দেহ নামানো হয়েছিল। সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী দেবলীনা হেমব্রম, বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা বাউরি, বাঁকুড়ার প্রাক্তন সভাধিপতি পার্থ প্রতিম মজুমদার, সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি-সহ সিপিএম এবং বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতৃত্ব। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ প্রাক্তন সাংসদের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। জেলার একাধিক সংস্থা এবং সংগঠনের তরফেও বাসুদেবকে শ্রদ্ধার্ঘ জানানো হয়। মিছিল করে পুয়াবাগান মোড় থেকে বিরসা মুন্ডা মোড় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয় বাসুদেবের দেহ।
এর পর দুপুর ১২টা নাগাদ প্রাক্তন সাংসদের দেহ আবার শববাহী গাড়িতে চাপিয়ে বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন দলীয় নেতাকর্মী এবং পরিবারের সদস্যেরা। প্রথমে পুরুলিয়ায় সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর দেহ। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে আদ্রায় বাসুদেবের বাসভবনে। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
বাসুদেবের সহযোদ্ধা তথা সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য তপন সেন বলেন, ‘‘বাসুদেব আচারিয়ার মৃত্যু রাজনীতির ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি। শুধু বাংলার রাজনীতিতে নয় সর্বভারতীয় রাজনীতিতেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। সংসদের ভিতরে ও বাইরে শ্রমিক শ্রেণির আন্দোলনকে যে ভাবে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা সংসদের ইতিহাসে বিরল। মানুষের জন্য তাঁর দরজা সবসময়ই খোলা ছিল।’’
প্রসঙ্গত, ১৯৪২ সালের ১১ জুলাই পুরুলিয়ায় জন্ম হয়েছিল বাসুদেবের। সেখানেই পড়াশোনা। ছাত্র বয়সেই বাম আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আদিবাসীদের নানা ধরনের আন্দোলন এবং স্বাক্ষরতা অভিযানে পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। ১৯৮০ সালে বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন বাসুদেব। তার পর ২০১৪ পর্যন্ত সেখানকার সাংসদ ছিলেন তিনি। রেলের শ্রমিক আন্দোলনেরও অন্যতম নেতা ছিলেন বাসুদেব। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী মুনমুন সেনের কাছে হেরে যান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy