E-Paper

আষাঢ়ান্তেও শুকোচ্ছে আনাজ খেত

এ বার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাঁচ-ছয় বিঘা জমিতে বেগুনের সঙ্গে লাউ ও বরবটি চাষ করেছিলেন। এ বার বৃষ্টির অভাবে লোকসানের মুখ দেখছেন।

বাঁকুড়ার মাচানতলা সব্জীবাজার।

বাঁকুড়ার মাচানতলা সব্জীবাজার। নিজস্ব চিত্র।

প্রশান্ত পাল  , রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ ০৭:১৯
Share
Save

‘‘মারে হরি, রাখে কে’’— বৃষ্টির অভাবে পাঁচ বিঘা জমিতে শুকিয়ে যাওয়া বেগুন গাছের দিকে তাকিয়ে আক্ষেপ করছিলেন আড়শা ব্লকের বামুনডিহার চাষি মিলন মাহাতো। সপরিবারে ১০-১২ হাজার বেগুন চারা বসিয়ে নিশ্চিন্তে ছিলেন আষাঢ়-শ্রাবণে বিয়ের মরসুমে লাভ করবেন। তাঁর আশায় ছাই ঢেলেছে বৃষ্টির অভাব। মিলনের কথায়, ‘‘সপ্তাহ দুই-তিন আগেও এক-দু’দিন ছাড়া ১২-১৫ কুইন্টাল করে বেগুন বিক্রি করেছি। তখন দাম পাইনি। ১০-১২ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। এখন দাম উঠেছে কিন্তু জমিতে বেগুন নেই।’’

শীতে বেগুন চাষ করে বৃষ্টির জেরে লোকসান হয়েছিল ওই গ্রামের আশারাম মাহাতোর। এ বার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাঁচ-ছয় বিঘা জমিতে বেগুনের সঙ্গে লাউ ও বরবটি চাষ করেছিলেন। এ বার বৃষ্টির অভাবে লোকসানের মুখ দেখছেন।

তাঁর আক্ষেপ, ‘‘সেচ দিয়ে যে গাছ বাঁচিয়ে রাখব, জলই তো নেই! সবই অদৃষ্ট।’’ একই কারণে কপাল চাপড়াচ্ছেন জেলার অন্য প্রান্ত কাশীপুরের সুতাবই
গ্রামের আনাজ চাষি অরুণ গরাঁই-ও। বলছেন, ‘‘জলের অভাবে সব শুকিয়ে গেল।’’

পুরুলিয়া জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু নন্দন বলেন, ‘‘বৃষ্টির অভাবে গ্রীষ্মকালীন আনাজের চাষ এ বারে বেশ কিছুটা মার খেয়েছে। তাই বাজারে আনাজের দাম চড়েছে।’’ তবে কত জমির আনাজ জলের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই হিসাব দফতরের কাছে নেই।

বাঁকুড়া জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক দেবাশিস মান্নার দাবি, ‘‘জেলায় মূলত সেচসেবিত এলাকাগুলিতেই সবজি চাষ হয়। বৃষ্টি কম হলেও তাই বিশেষ প্রভাব পড়ে না আনাজে। এ বছর এখনও পর্যন্ত
ক্ষয়ক্ষতির কোনও রিপোর্ট আমাদের কাছে আসেনি।’’

তবে এ বছর অত্যাধিক গরম ও দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে জলস্তর নেমে যাওয়ায় সেচসেবিত এলাকার চাষিরাও সঙ্কটে। বাঁকুড়া ২ ব্লকের চাষি তাপসকান্তি দে ঢেঁড়স, লাউ চাষ করেছেন। তাঁর আক্ষেপ, প্রচণ্ড গরমে আনাজের ফুল ঝরে গিয়ে ফলন মার খেয়েছে। এতই খারাপ অবস্থা যে তাঁকেও আনাজ কিনে খেতে হচ্ছে। তিনি বলেন ‘‘যেটুকু ফলন হয়েছে, তা বাঁচাতে খরচও বেড়ে গিয়েছে। গরমে জলস্তর অনেক নেমে যাওয়ায় সেচের জলের খরচও ঘণ্টায় ৬০-৭০ টাকা বেড়ে গিয়েছে।’’

ওন্দার সানতোড়ের সুজিত কুন্ডু লঙ্কা, ঢেঁড়স, পটল, কুঁদরির চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিকে তাপপ্রবাহে বেশ কিছু চারা নষ্ট হল। গত ক’দিনে বৃষ্টি হওয়ায় গরম কমেছে। কিন্তু জলের অভাবে টাকা খরচ করে জল কিনে চাষ বাঁচাতে হচ্ছে।’’

তবে উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা বর্ষাকালীন আনাজ নিয়ে আশাবাদী। এখনও সময় রয়েছে। বৃষ্টি নামলে বর্ষাকালীন আনাজ
চাষে সমস্যা হবে না। (চলবে)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia bankura

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।