খুনের অভিযোগ গ্রেফতার দুই ব্যক্তি। প্রতীকী চিত্র।
পুরুলিয়া জেলার দু’টি এলাকায় দুই তরুণীকে খুনে গ্রেফতার হলেন তাঁদের স্বামী।
শনিবার অযোধ্যাপাহাড়ের পোড়াডি গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে একটি জঙ্গল থেকে ছুটুমণি সরেনের (২১) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের দাবি, গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় গাছ থেকে নামিয়ে তাঁকে বাঘমুণ্ডির পাথরডি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। বিডিও (বাঘমুণ্ডি) দেবরাজ ঘোষ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে বধূর দেহের সুরতহাল করেন। তারপরে দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। পরে বধূর বাবা বাবা লাল সিং মুর্মু থানায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন।
তারপরেই শনিবার পুলিশ অভিযুক্ত শ্যামচাঁদ সরেনকে গ্রেফতার করে। তাঁর বাড়ি অযোধ্যাপাহাড়ের পোড়াডি গ্রামে। রবিবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে তাঁর তিন দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর তিনেক আগে অযোধ্যাপাহাড়ের জিলিংসেরেং গ্রামের ছুটুমণির সঙ্গে শ্যামচাঁদের বিয়ে হয়। তাঁদের কোনও সন্তান নেই। মৃতের বাবার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁর মেয়ের উপরে অত্যাচার চালাত জামাই।
পুরুলিয়া মফস্সল থানার রাঘবপুরের বধূ লক্ষ্মী দাসকেও (২০) বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে অত্যাচার করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে রাঁচীর কোনও হাসপাতালে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
লক্ষ্মীর বাবা পাড়া থানার ভাগাবাঁধের বাসিন্দা গণেশ দাসের দাবি, বছর দুয়ের আগে টাকা-সহ নানা সামগ্রী পণ হিসেবে দিয়ে মেয়ের বিয়ে দেন। কিন্তু তার কয়েক মাস পরেই জামাই মোটরবাইক কিনে দেওয়ার জন্য এবং আরও টাকা দাবি করে তাঁর মেয়ের উপরে চাপ দিতে থাকেন। অত্যাচারও চলছিল।
সেই টাকা জোগাড় করতে তিনি দিল্লিতে কাজে যান। সেখান থেকে ২০ হাজার টাকা তিনি মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পাঠান। আগামী দুর্গাপুজোর আগে বাকি টাকা দেবেন বলে আশ্বস্ত করে মেয়ের উপরে অত্যাচার বন্ধ করতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই মেয়ের মৃত্যু হল।
শনিবার তিনি পুরুলিয়া মফস্সল থানায় অভিযোগে জানান, মেয়ে অসুস্থ জেনে বুধবার তাঁরা পুরুলিয়া মেডিক্যালে আসেন। সেখান এসে জানতে পারেন, মেয়েকে রাঁচীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাঁচীতে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়। তাঁর দাবি, লক্ষ্মীর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কখনও বলছেন, তিনি বিষ খেয়েছেন, কখনও বলছেন, তিনি গলায় দড়ি দিয়েছেন।
তাঁর অভিযোগ, মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই খুন করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ লক্ষ্মীর স্বামী রাজু দাসকে শনিবার গ্রেফতার করে। রবিবার তাঁকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশ হেফাজত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy