বিষ্ণুপুরের রাঙামেটা মোড়ে বিক্ষোভ। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী
প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরে, দু’দিন কেটে গেলেও পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় এখনও তা নিয়ে টানাপড়েন বন্ধ হয়নি তৃণমূলে। দল সূত্রের দাবি, পুরুলিয়া শহরের দু’টি ওয়ার্ডে ঘোষিত প্রার্থীরা দলের কাছে সে ওয়ার্ড থেকে লড়তে চান না বলে জানিয়েছেন। বাঁকুড়া শহরে শিক্ষক-নেতা গৌতম দাসকে প্রার্থী করার দাবিতে সোমবার অবস্থান-বিক্ষোভ করেন কিছু নেতা-কর্মী। বিষ্ণুপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডেও প্রার্থী নিয়ে বিক্ষোভ হয় এ দিন।
শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর থেকে, পুরুলিয়া শহরে জাতীয় সড়ক অবরোধ, নানা ওয়ার্ডে কর্মী-বিক্ষোভ, জেলা কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ হয়েছে। টিকিট না পেয়ে দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান শামিমদাদ খান-সহ তিন বিদায়ী কাউন্সিলর। জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, কর্মীদের দাবি অনুযায়ী, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রার্থী বদলের সুপারিশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে, শহরের ১৯ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দল যাঁদের প্রার্থী করেছে, তাঁরা সেখানে লড়তে চান না বলে দলীয় নেতৃত্বকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন।
এ বার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করেছেন দলের শহর সভানেত্রী মৌসুমী ঘোষকে। গত বার তিনি ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তালিকা প্রকাশের পর দিনই তাঁর অনুগামীরা তাঁকে পুরনো ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করার দাবিতে সরব হন। আবার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থিপদের দাবিদার এক নেতা ইতিমধ্যে দলের সঙ্গে আর কোনও সংসর্গ রাখছেন না বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে মৌসুমী বলেন, ‘‘আমি ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়ব না, তা দলকে জানিয়েছি।’’
বিদায়ী পুর-বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তথা দলের প্রাক্তন শহর সভাপতি বৈদ্যনাথ মণ্ডলকে এ বার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। সেখানে প্রার্থী করা হয় সত্য বাউরিকে। বৈদ্যনাথের অনুগামীদের দাবি, গত বিধানসভা ভোটে তাঁর ওয়ার্ড থেকে দল ‘লিড’ পেয়েছিল। তাই তিনি টিকিটের দাবিদার। তৃণমূল সূত্রের খবর, সত্য ওই ওয়ার্ডে লড়তে চান না বলে দলকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তাই এ বার তৃণমূল নেতৃত্ব ওই ওয়ার্ডে কাকে প্রার্থী করেন, সে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, প্রার্থী অপছন্দের বিষয়টি সোমবারও পুরুলিয়া জেলা নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছেন দু’-একটি ওয়ার্ডের কর্মীরা। দলের ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির তরফে শান্তনু চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘এই ওয়ার্ডে ভোটের কিছু দিন আগে কংগ্রেস ছেড়ে আসা যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে, তাঁকে নিয়ে কর্মীদের আপত্তি রয়েছে।’’ ১০ নম্বর ওয়ার্ডেও একই রকম পরিস্থিতি বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘দু’জন প্রার্থী নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সে তথ্য-সহ আরও কয়েকটি বিষয় রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। যেমন নির্দেশ আসবে, সে অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’ জেলা তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রার্থী নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হলেও, তা সাময়িক। দলের জন্য সকলেই এককাট্টা হয়েই লড়বেন।’’
বর্তমানে বাঁকুড়া পুরপ্রশাসক মণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক নেতা গৌতম দাসকে প্রার্থী করার দাবি তুলে সোমবার বাঁকুড়ার মাচানতলা মুক্ত মঞ্চে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র কিছু কর্মী। গৌতমবাবু ওই সংগঠনের জেলা সভাপতি। এ দিন বিকেলে মিছিলের পরে, ওই কর্মসূচি শুরু হয়। সংগঠনের বাঁকুড়া সদর মহকুমা সভাপতি অগ্নিময় চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘গৌতমদা দেড় বছর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীতে রয়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ে উদ্যোগী পদক্ষেপ করেছেন তিনি। তাঁকে দল প্রার্থী না করায় শিক্ষকদের বড় অংশ হতাশ।’’ তিনি জানান, গৌতমবাবুকে প্রার্থী করার দাবিতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে ই-মেল করা হয়েছে। গৌতমবাবু অবশ্য বলেন, “আবেগতাড়িত হয়েই শিক্ষকেরা এই কর্মসূচি করেছেন। প্রার্থী নির্বাচন দলের বিষয়। এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
বিষ্ণুপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী বদলের দাবিতে এ দিন রাঙামেটা মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। রবিবার সন্ধ্যায় শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী বদলের দাবিতে মিছিল করেন কিছু তৃণমূল কর্মী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy