মহম্মদ রুহুল আমিন। নিজস্ব চিত্র।
পাকা বাড়ি। তবে টিনের ছাউনি। আছে ফ্রিজ ও পাঁচ বিঘে জমি। জমি চাষের আয়েই কোনওরকেমে সংসার চলে। তার পরেও আবাস যোজনা তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দিতে বিডিওর (মুরারই ১) কাছে আবেদন জানালেন চাতরা পঞ্চায়েতের খানপুর গ্রামের তৃণমূল কর্মী মহম্মদ রুহুল আমিন। তাঁর আবেদন, গ্রামে তাঁর থেকেও দুঃস্থ অনেকে আছেন। তাঁদের নাম আবাস যোজনার জন্য বিবেচনা করা হোক।
আবাস যোজনার তালিকা নিয়ে জেলায় অশান্তি অব্যাহত। বিরোধীরা এ নিয়ে নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। জমা দিচ্ছে স্মারকলিপিও। এরই মাঝে অন্য নজির গড়লেন রুহুল। তিনি ২ জানুয়ারি বিডিও-র কাছে তাঁর নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানান।
গ্রামবাসীর একাংশ জানান, খানপুরের মণ্ডল পাড়ার বাসিন্দা রুহুলের বাড়ির ছাউনি টিনের। কবে কংক্রিটের ছাদ দিতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, কষ্টের সংসার। চাষের আয়ই ভরসা। তবুও তাঁর নাম আবাস তালিকায় দেখে নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন রুহুল। রুহুল বলেন, ‘‘গ্রামের অনেকের খড়ের চাল ও মাটির বাড়ি আছে। ঝড়ের সময় আতঙ্ক ও বৃষ্টি হলে ঘরে জল পড়ে সমস্ত সামগ্রী নষ্ট হওয়ার ঘটনা চোখের সামনে দেখেছি। তাই আমার নাম বাদ দেওয়ার জন্য বিডিওর কাছে আবেদন করেছি। পাশাপাশি, গ্রামে পাকা বাড়ি এমন কারও নাম তালিকায় থাকলে বাদ দিতে বলেছি। দুঃখের কথা, যে সমস্ত আধিকারিক, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সমীক্ষা করেছেন তাঁরা গ্রামে উপভোক্তার বাড়ি যাননি। যদি যেতেন, তা হলে আমার নাম তালিকা থেকে বাদ যেত। এই বিষয়টিও বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’ এই আবেদন পেয়ে প্রশাসন তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বিডিও প্রণব চট্টরাজ বলেন, ‘‘এই মনোভাবের মানুষজন সমাজে থাকলে আবাস নিয়ে কোনও সমস্যায় থাকবে না।’’
তিনি তৃণমূল কর্মী। সে কথা স্বীকার করে রুহুল বলেন, ‘‘অভাব দেখেছি। কাজ করে আজ একটু হলেও ভাল আছি। পরিবারের মুখে দু’বেলা খাবার যোগান দিতে পারছি। গ্রামের অনেকের আমার থেকেও বেশি ঘর দরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মন থেকে শ্রদ্ধা করি। তাঁর দল প্রাণ থেকে করে থাকি। আবাস নিয়ে দলের বদনাম হলে মানতে পারব না। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’ চাতরার পঞ্চায়েত প্রধান সোনালি মাল বলেন, ‘‘২০১৮ সালে জনসমীক্ষা অনুসারে রুহুল বাড়ি পেয়েছিলেন। তিনি বাড়ি নেবেন না। এটা ভাল কথা। রুহুলের মতো সকলে হলে কোনও সমস্যা হত না। তৃণমূল কর্মী হিসেবে তাঁকে কুর্নিশ জানাই।’’
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক অরিন দত্ত বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মী হোক বা সাধারণ উপভোক্তা তিনি যে তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন সেটা বড় মানসিকতার পরিচয়।’’ প্রণব চট্টরাজ বলেন, ‘‘আবেদন পেয়েছি। তাঁর নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য জেলায় আবেদন করা হয়েছে। তবে তিনি যে অভিযোগ করেছেন তার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy