প্রতীকী ছবি।
পরিষেবা না শুল্ক এই তরজায় গ্রামেগঞ্জেও পাল্লা ভারি পরিষেবারই। ঋণের ভারে জর্জরিত এয়ারটেল ও ভোডাফোন ১৮ নভেম্বর কল চার্জ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে। তার পরের দিনই জিয়ো’ও ঘোষণা করে, পয়লা ডিসেম্বর থেকে কল চার্জ বাড়াচ্ছে তারাও। কল চার্জ ঠিক কী পরিমাণ বাড়ছে, সব টেলিকম সংস্থাগুলি একই সঙ্গে তাদের কল চার্জ বাড়াবে কী না সেটা স্পষ্ট হয়নি শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্কের পরিষেবার মান উন্নত করার আর্জি জানিয়েছেন অধিকাংশ গ্রাহক। কল ড্রপ থেকে নেটওয়ার্ক না থাকার পাশাপাশি ডেটা নিয়ে ধোঁয়াশা মিটিয়ে শুল্ক না বাড়ালে সাধারণ মানুষের সমস্যা বাড়বে বলেই মনে করছেন রিচার্জ ও সিম বিক্রির আউটলেটের মালিক এবং কর্মীরা।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার শবনম বানু বলেন, ‘‘কল চার্জ বাড়লে কষ্ট হবে ঠিকই। কিন্তু সবার আগে চাইব উন্নততর পরিষেবা।’’ প্রায় একই দাবি দুবরাজপুরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সঞ্জীব চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘এখন তো কথাই বলা যাচ্ছে না। ডেটা খরচ নিয়েও কোথাও যেন একটা ধোঁয়াশা রয়েছে। সেগুলো ঠিক হোক।’’
ঝুঁকি না নিয়ে পুরনো দরে রিচার্জ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ নিয়েছেন অনেক মোবাইল গ্রাহকই। একথা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন প্রান্তে মোবাইল রিচার্জ করানোর রিটেল কাউন্টারগুলির মালিকেরাও। “দাদা, আমার নম্বরে ৩৯৯ এর প্যাকটা ভরে দিন। কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করব না। যদি দাম অনেক বেড়ে যায়!’’ শনিবার সকালে দুবরাজপুরের একটি মোবাইল রিচার্জের রিটেল কাউন্টারে দাঁড়িয়ে কথাটা বলছিলেন এক যুবক। শুধু দুবরাজপুর নয়, মোবাইলের কল চার্জ বাড়তে পারে এই আশঙ্কার জেলা সদর সিউড়ি, বোলপুর, রামপুরহাট সহ বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল রিচার্জ কাউন্টারগুলিতে শনিবার একটু বেশিই ভিড় ছিল। কেউ ১১৯ তো, কেউ চাইছেন ৫৯৯ দিয়ে রিচার্জ করতে।
আর্থিক সঙ্কটে ভোগার কথা জানিয়েছে এয়ারটেল ও ভোডাফোন। জিয়ো প্রাথমিকভাবে অবশ্য উল্টো দাবি করেছিল। বছরখানেক আগে স্পেকট্রাম কেনার জন্য প্রচুর টাকা খরচ করতে হয় টেলিকম সংস্থাগুলিকে। তার জেরে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও করতে হয় তাদের। সেই টাকা তারা তুলতে পারছে না বলে দাবি করেছে দুই টেলিকম সংস্থা। এদিকে গ্রামেগঞ্জে টেলিকম পরিষেবার মান ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে এমন অভিযোগ দিন দিন বাড়ছে। তারপরে কলচার্জ বাড়ানোর সিদ্ধান্তে চিন্তায় সাধারণ মানুষ। চাই পুরনো প্ল্যানেই বেশিরভাগ গ্রাহক রিচার্জ করে রাখতে চাইছেন।
মোবাইল রিচার্জের রিটেল কাউন্টারের মালিক দুবরাজপুরের রাহুল লোহারুকা, জয়দেব দে, সিউড়ির সুফি সাজ্জাদ হোসেইন, মাধব দাস, রামপুরহাটের অনিল বোথরারা বলেন, ‘‘ঠিক কী হবে আমরাও জানি না। কোন টেলিকম সংস্থা কতটা বাড়াবে স্পষ্টভাবে জানায়ওনি। তবে গ্রাহকদের মধ্যে কৌতুহল ও আশঙ্কা দুটোই ছিল। আমরা যেটুকু শুনেছি মাশুল বাড়ছে। সেটা ১০-২০ শতাংশ হতে পারে।’’ কেউ কেউ আবার বলছেন, এয়ারটেল ভোডাফোন মিনিটে ১০-১২ পয়সা শুক্ল নিতে পারে। কথা বলার খরচ বাড়ার আগেই তাই অনেকে শনিবার সে কাজ সেরে রেখেছেন। উল্টোদিকও রয়েছে। জেলার অনেক গ্রাহকের দাবি, মাশুল বা কল চার্জ বাড়ুক কিন্তু উন্নততর পরিষেবাটা আগে দিক মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি।
সিউড়ির বাসিন্দা তথা রাজ্য সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মী অনিন্দ্য সুন্দর রায় বলেন, ‘‘কল ও ডেটা চার্জ কমানোর পরে আমরা অনেকেই মোবাইল অ্যাপস, ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি কেমন যেন অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি। যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। চার্জ বাড়লে একটু অসুবিধা হবে।’’ অনিন্দ্যর সংযোজন, ‘‘কল চার্জ কম থাকায় সমাজের প্রান্তিক মানুষেরাও মোবাইল ব্যবহার করছেন। কল চার্জ বাড়ালে সমাজের সকল স্তরের মানুষের কথা ভেবেই করা উচিৎ। আর চাইব ঠিক আগের মতো পরিষেবা পেতে। যেটা এখন নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy