রংবদল: বিজেপির পতাকা হাতে পঞ্চায়েত প্রধান। ডাবুকে। নিজস্ব চিত্র
পাঁচবারের পঞ্চায়েত সদস্য। তার মধ্যে দুবার পঞ্চায়েত প্রধান। তৃণমূলের এই পঞ্চায়েত প্রধানের বিজেপিতে যোগদান ঘিরে টালমাটাল ময়ূরেশ্বর বিধানসভা এলাকার ময়ূরেশ্বর-১ পঞ্চায়েত সমিতির ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রধানের সঙ্গে উপপ্রধান-সহ আরও তিন পঞ্চায়েত সদস্যকে দলে টেনে তৃণমূলের হাত থেকে পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে গেল বিজেপি।
শনিবার ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান কল্যাণী গোস্বামী, উপপ্রধান পলাশ রজক-সহ ৫ জন তৃণমূল সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেন। পাশাপাশি ময়ূরেশ্বর-১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য কুমার গৌরব গোস্বামী (তিমির) যিনি কল্যাণীদেবীর ছেলে তিনিও বিজেপিতে যোগদান করেন। মল্লারপুর থানার বেগুনিয়া গ্রামে এক অনুষ্ঠানে ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পাঁচ জন তৃণমূল সদস্য এবং এক জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছাড়া ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের দুড়কি গ্রাম অনেক তৃনমূল কর্মী সমর্থকরা বিজেপিতে যোগদান করেন। এছাড়াও ময়ূরেশ্বর-১ পঞ্চায়েত সমিতির তালোয়া, বড়তুড়িগ্রাম, দক্ষিণগ্রাম এই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেক সিপিএম কর্মী সমর্থক ওই একই অনুষ্ঠানে বিজেপিতে যোগদান করেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে তৃণমূল, সিপিএম থেকে আসা পঞ্চায়েত সদস্য এবং কর্মী সমর্থকদের হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অর্জুন সাহা, জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়- সহ বিজেপির অন্যান্য নেতৃত্ব।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৩ সদস্যের ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতে দলগত অবস্থান ছিল তৃণমূল ১০, বিজেপি ২, সিপিএম ১। তৃণমূল এককভাবে নিরঙ্কুশ প্রাধান্য থাকার ফলে দ্বিতীয়বারের জন্য পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হন বীরচন্দ্রপুর থেকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য কল্যাণী গোস্বামী। উল্লেখ্য, ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতে বীরচন্দ্রপুর থেকে কল্যাণী গোস্বামী মোট ৫ বার পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হয়। তার মধ্যে ২০১৩ এবং ২০১৮ দু’বার গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান ছিলেন কল্যাণীদেবী।
শনিবার তৃণমূল থেকে পাঁচ জন পঞ্চায়েত সদস্যকে নিজেদের কব্জায় আনতে পেরে পঞ্চায়েতে বিজেপি সদস্য দুই থেকে বৃদ্ধি পেয়ে সাত হল। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি সিপিএম থেকে নির্বাচিত এক জন পঞ্চায়েত সদস্য সমীর মুর্মু অনেক আগেই বিজেপিতে যোগদান করেছে। এর ফলে বর্তমানে ১৩ সদস্যের ডাবুক পঞ্চায়েতে বিজেপি সদস্য সংখ্যা আট হল।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায় ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান, উপপ্রধান সহ ৫ জন তৃণমূল সদস্য বিজেপি তে যোগদান করাতে ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত এবারে বিজেপির দখলে আনতে কোনও অসুবিধা থাকল না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির ৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্বাচন হয়। তার মধ্যে মল্লারপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি জয়ী হয়েছিল। বাকি ৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল জয়ী হয়।
এবারে শনিবার দলবদল করে ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি দখল করার দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেল।
কেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে? দুবারের তৃণমূল প্রধান কল্যাণী গোস্বামী বলেন, ‘‘তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব উপযুক্ত সম্মান দেয় না। যার জন্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলাম।’’
অন্যদিকে, কুমার গৌরব ওরফে তিমির ময়ূরেশ্বর-১ পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য। শনিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করে তিমির বলেন, ‘‘ময়ূরেশ্বর বিধানসভা বিজেপির দখলে আনতে হবে। আগামী দিনে সেটাই হবে আমার লক্ষ্য।’’ বিজেপিতে প্রধান, উপপ্রধানসহ পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি থেকে দলীয় সদস্যদের যোগদান এবং পঞ্চায়েত হাতছাড়া প্রসঙ্গে ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের ময়ূরেশ্বর-১ ব্লক সভাপতি অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে ডাবুক পঞ্চায়েতে একমাত্র তিমির গোস্বামীর এলাকায় বিজেপি প্রার্থী জয়ী হয়েছে। এলাকার মানুষ তিমিরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ভোট দিয়েছে। পায়ের তলায় মাটি সরে যাওয়ার জন্য তিনি এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এতে দলের সাংগঠনিক কোনও ক্ষতি হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy