বুথ ধরে ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করল পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল। বৃহস্পতিবার ভোটার তালিকা যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব।
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা নেতৃত্বের বৈঠকে জেলার সব ব্লক ও শহর সভাপতিদের বুথভিত্তিক ভোটার তালিকা দেওয়া হয়। তাঁদের অঞ্চল ও বুথ স্তরে ভোটার তালিকা পাঠিয়ে তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে ২০-৩০ হাজার করে নাম অনলাইনে ভোটার তালিকায় তোলা হবে। ওই সব বহিরাগতদের মাধ্যমেই বিজেপি ভোট করার কৌশল নিয়েছে। মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে এ ভাবেই ভোট হয়েছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী।
এর পরেই রাজ্য তৃণমূলের নিচুতলায় ভোটার তালিকায় নজরদারির নির্দেশকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন কর্মীরা।
পুরুলিয়া জেলা ও পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের মধ্যে ৩৮০ কিলোমিটার সীমানা রয়েছে। পুরুলিয়া জেলার ন’টি বিধানসভার মধ্যে বান্দোয়ান, বলরামপুর, বাঘমুণ্ডি, জয়পুর, পুরুলিয়া, পাড়া ও রঘুনাথপুর ঝাড়খণ্ড সীমানার সঙ্গে লেগে রয়েছে। ওই সাতটির মধ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটিতে জেতে বিজেপি। গত বছরের লোকসভা ভোটে ওই সাতটি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। সামান্য ব্যবধানে বলরামপুর ও রঘুনাথপুর কেন্দ্রে পিছিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির।
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার একাধিক বিধানসভাই ঝাড়খণ্ড লাগোয়া। ভোটের সময় ওপার থেকে এপারে এসে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ রয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তাই নিচুতলায় বুথ এবং অঞ্চল সভাপতিদের নতুন ভোটার তালিকা ভাল করে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। নতুন কার নাম তালিকায় উঠেছে, তিনি এলাকারই বাসিন্দা কি না বা কারও নাম বাদ পড়ে থাকলে, কেন বাদ পড়েছে তা ভাল করে দেখতে বলা হয়েছে।’’
অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার পাল্টা দাবি, ‘‘বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকিয়ে এখানে ভোটার তালিকায় নাম তোলানোর পিছনে কে বা কারা, তা সবাই জানেন। আমরাও চাই ভুয়ো ভোটারের নাম তালিকা থেকে সাফাই করা হোক।বাংলাদেশি ভোটারের নাম তালিকায় থাকবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ তাঁর দাবি, ভিন্ রাজ্যের কোনও বাসিন্দা কর্মসূত্রে এ রাজ্যে থাকলে তিনি ভোটার তালিকায় নাম তুলতেই পারেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়। সেই তালিকায় মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ২৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ১৯৫। ২৫ জানুয়ারি যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে সে তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা এখন ২৪ লক্ষ ১১ হাজার ৫১০। চূড়ান্ত তালিকায় ভোটার বেড়েছে ১৬ হাজার ৩১৫।জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘২৫ জানুয়ারি জাতীয় ভোটার দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তবে এর পরেও নাম তোলার জন্য
আবেদন করা যাবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)