অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিজের ভোটের সময় জিতবেন, অথচ লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে দল জিতবে না, তা হবে না। লোকসভা ভোটের পরে এ ভাবে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করায় চিন্তায় পড়েছিলেন পুরুলিয়ার দলীয় পুর-প্রতিনিধি, পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানদের অনেকে। কে কে পদ হারান— এই জল্পনা চলেছিল। মাস খানেকের বিরতির পরে ফের সেই আলোচনা ফিরে এসেছে।
টানা দু’বার পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির কাছে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। পুরুলিয়া ও ঝালদা পুরসভা তৃণমূলের দখলে থাকলেও দুই শহরেই ভোটের নিরিখে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। পুরুলিয়ায় ২টি ও ঝালদার ১টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। পুরুলিয়া শহরে তৃণমূলের থেকে প্রায় ২৩ হাজার বেশি ভোট পেয়েছে বিজেপি। পুরুলিয়া বিধানসভাও ২০১৬ থেকে তৃণমূলের হাতছাড়া।
ঝালদা পুরসভা বাঘমুণ্ডি বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন। ওই কেন্দ্রেও লোকসভা ভোটে বিজেপি ১১ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে গিয়েছে। অথচ ২০২১ সালে বাঘমুণ্ডি বিধানসভা তৃণমূল দখল করেছিল।
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের অধীন রঘুনাথপুর বিধানসভা কেন্দ্রে লোকসভা ভোটে তৃণমূল ৪৫৫ ভোটে এগিয়ে থাকলেও রঘুনাথপুর পুরসভায় ভরাডুবি ঘটেছে তাদের। একটি ওয়ার্ডের এগিয়ে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এলাকা বা ওয়ার্ড ভিত্তিক লোকসভা ভোটের ফলাফলের ‘মার্কশিট’ হাতে রেখে ভোটের সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখেছে দলের ভোট-কুশলী সংস্থা। ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান, দলীয় পুর-প্রতিনিধি ও সাংগঠনিক পদাধিকারীদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার কক্ষে পৃথক ভাবে কথা বলেন। সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। সূত্রের খবর, ভোটের ফলাফল এবং এই রিপোর্ট দেখে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ে রীতিমতো অসন্তুষ্ট।
সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটে হারার পরে প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো দলীয় নেতৃত্বের কাছে নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের ইঙ্গিত দেন। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত এবং পুরসভার সিংহ ভাগ আসন দলের হাতে থাকা সত্ত্বেও কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের একাংশ সক্রিয় না হওয়ায় দলকে হারতে হয়েছে বলে প্রার্থী ও দলের তরফে রিপোর্ট রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা পড়ে।
ভোটে বিপর্যয় কারণ নিচুতলায় খতিয়ে দেখেন ভোট কুশলী সংস্থার প্রতিনিধিরা। সূত্রের দাবি, জনপ্রতিনিধিদের একাংশের জনবিচ্ছিন্নতা ও দুর্নীতিকেই তৃণমূলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে চিহ্নিত করেছে ওই সংস্থা। এলাকায় উন্নয়নের নানা কাজ হলেও তা ভোট টানতে পারেনি।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, অভিষেকের রদবদলের সম্ভাবনার কথা নতুন করে ঘোষণার পরে উদ্বেগ ফিরে এসেছে তৃণমূল নেতাদের মনে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তাঁদের অনেকে রাজ্যস্তরের পরিচিত নেতাদের ফোন করে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব যা ঠিক মনে করবেন, সে মতো রদবদল হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy