শান্তিনিকেতনের বনডাঙায় ধর্নামঞ্চে বক্তব্য রাখছেন নানুরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র
নন্দীগ্রামে এক দলীয় সভা থেকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বিরুদ্ধে ‘কুকথা’ বলেছিলেন তৎকালীন কারামন্ত্রী অখিল গিরি। যা নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। অখিলকে তিরস্কার করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার আবার সেই রাষ্ট্রপতিকেই ‘মূক ও বধির’ বলে ‘কটাক্ষ’ করলেন নানুরের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য।
রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া ‘অপারিজতা বিলে’ রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের দাবিতে রবিবার শান্তিনিকেতনের বনডাঙায় তৃণমূলের ধর্নামঞ্চে এই মন্তব্য করেন তিনি। এই মন্তব্য রাষ্ট্রপতির ‘অবমাননা’ বলে নিন্দা করেছে বিরোধীরা। যা নিয়ে ‘অস্বস্তি’তে পড়েছে তৃণমূলও। কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের দাবি, কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার থাকলে দলের শৃঙ্খলা কমিটি নেবে। যদিও তাঁর মন্তব্যে রাষ্ট্রপতির অবমাননা হয়েছে মেনে নিয়েও নিজের মন্তব্য অনড় থেকেছেন সুব্রত।
‘অপরাজিতা বিলে’র অনুমোদনের দাবিতে শনি ও রবিবার ব্লকে ব্লকে ধর্না ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। এ দিন বনডাঙায় তেমনই একটি ধর্না ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। সুব্রতের পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, নানুরের বিধায়ক বিধান মাঝিও। এখানে বক্তব্য রাখতে
গিয়ে সুব্রত বলেন, ‘‘আজকের জমায়েত থেকে আওয়াজটা পৌঁছে যাবে দিল্লির করিডরে। যেখানে রাষ্ট্রপতি নির্বাক হয়ে বসে
আছেন। যেখানে রাষ্ট্রপতি মূক ও বধির হয়ে বসে আছেন। তাঁর চরিত্রটা বাংলার মানুষের কাছে খুলে দিতে হবে। আর তাঁকে সাহায্য করছেন বিজেপির সর্বাধিনায়ক প্রধানমন্ত্রী।’’ এর পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ
মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের এটাই সংস্কৃতি। এরা দেশের সম্মানীয় ব্যক্তিদের সম্পর্কে কী ভাবে কথা বলতে হয়, সেটুকু পর্যন্ত জানে না। তৃণমূলের আর এক বিধায়কও এর আগে রাষ্ট্রপতি সম্বন্ধে কুকথা বলেছিলেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “রাষ্ট্রপতি সম্বন্ধে এ ধরনের মন্তব্য করা যায় না। ওঁরা নিজেদের দোষ ঢাকতে রাষ্ট্রপতির ঘাড়ে এই বিল চাপাতে চাইছেন।”
এর পরেও নিজের মন্তব্য অনড় থেকেছেন সুব্রত। সভার পরে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি আমাদের প্রতিপালক। দেশের অন্যতম অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নারী সুরক্ষায় একটা বিল পাশ করেছেন। দু’মাস হয়ে গেল, কোনও আলোচনা হল না। তা হলে মূক ও বধির বলব না তো কী বলব!’’ এর পরেই সুব্রত সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই তিনি কারও অঙ্গুলিহেলনে চলছেন।’’ কিন্তু এ কথা কি রাষ্ট্রপতির অবমাননা নয়? উত্তরে সুব্রত বলেন, ‘‘অবশ্যই অবমাননা। তিনি যদি মানুষের বিরুদ্ধে অবমাননা করেন, মানুষও তো তাঁকে অবমাননা করবেন। আমরা তো মানুষের প্রতিনিধি।’’
এ নিয়ে চন্দ্রনাথ বলেন, “এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। যা বলার দল বলবে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার থাকলে দলের শৃঙ্খলা কমিটি নেবে।” এ দিনই বোলপুর শ্রীনিকেতন ব্লকের শ্রীনিকেতন বাজারে একই দাবিতে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চে হাজির ছিলেন চন্দ্রনাথ। সেখানে
আবার বিজেপি নেতা, কর্মীদের ‘কুকথা’ বলে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা শ্যামাপ্রসাদ ওরফে বাবু দাসের বিরুদ্ধে। পাল্টা সন্ন্যাসীচরণের কটাক্ষ, ‘‘অকথা, কুকথা বলে উনি রাতারাতি হিরো হতে চাইছেন। কিন্তু হিরো হওয়া এত সহজ নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy