প্রতীকী ছবি।
কোনও পুরসভায় ওয়ার্ডভিত্তিক সংরক্ষণ তালিকা চূড়ান্ত। কোথাও খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছে। কোনও পুরসভা সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশের আগে ওয়ার্ড পুর্নবিন্যাসের চূড়ান্ত করার অপেক্ষায়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও পুরভোটের দামামা এক প্রকার বেজেই গিয়েছে।
পুরভোটের প্রস্তুতি তাই শুরু হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরেও। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবির সূত্রে খবর, তাতে বিরোধী দল গুলির তুলনায় এ পর্যন্ত এককদম এগিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। শাসক দল যেখানে ইতিমধ্যেই ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটি গড়ে ফেলেছে এবং সেই কমিটি কাজে লেগে পড়েছে, সেখানে আড়মোড়া ভেঙে বাম-বিজেপি সবে সে কাজে হাত গিয়েছে। কংগ্রেস আরও পিছিয়ে। জানুয়ারি মাসের ওয়ার্ড ভিত্তিক সক্রিয় কর্মীদের তালিকা চূড়ান্ত করায় হাত দিয়েছে বাম শিবির। অন্যদিকে পুরসভা নির্বাচনে কৌশল কী হবে সেটা নিয়ে একটি শনিবার সাঁইথিয়ায় বৈঠক করেছে বিজেপি।
সব ঠিক থাকলে জেলার ৬টি পুরসভার মধ্যে একমাত্র নলহাটি বাদে বাকি সবকটি পুর নির্বাচন হওয়ার কথা চলতি বছরেই। সেই তালিকায় রয়েছে সিউড়ি, সাঁইথিয়া, বোলপুর, রামপুরহাট ও দুবরাজপুর। ১৭ সালেই মেয়াদ ফুরানোয় দুবরাজপুরে পুরসভার ওয়ার্ড ভিত্তিক সংরক্ষণ তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে আগেই। সাঁইথিয়া ও রামপুরহাট পুরসভার ওয়ার্ড ভিত্তিক সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার। বোলপুর ও সিউড়ি পুরসভার ওয়ার্ড ভিত্তিক পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত হলে সংরক্ষণ তালিকাও প্রকাশিত হবে।
তবে শাসক দলের প্রস্তুতি একটু আগে থেকেই শুরু হয়েছে। গত লোকসভায় ওই পাঁচটি পুরসভায় বিজেপির থেকে
পিছিয়ে থাকাই তার অন্যতম কারণ বলে দল সূত্রে খবর। পুর নির্বাচনের প্রস্ততিতে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে তারই প্রস্তুতি গত বছর ১৪ অগস্ট। সেদিন বোলপুরে একটি সাংগঠনিক বৈঠক করেছিল তৃণমূলের জেলা কমিটি। জেলার পাঁচটি ও পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা-সহ ৬টি পুরসভার পুরপ্রধান ও পুর নেতৃত্বকে ডেকে সেদিনই স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পুর নির্বাচনের আগে কী ভাবে প্রস্তুত হতে হবে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, পুর নেতৃত্বের প্রতি নির্দেশ ছিল পুর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ১০ জনের একটি করে ওয়ার্ড নির্বাচন কমিটি গড়ার। সঙ্গে বলা হয়েছিল প্রতিটি কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে তিনজন করে মহিলা কর্মী থাকবেন। ওয়ার্ড কমিটি পুর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে। বুথ কমিটি গুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই সবটা পরিচালিত হবে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, সেই নির্দেশ মেনেই জেলার পাঁচটি পুর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে সেই কমিটি তৈরি হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘ওই কমিটি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। কমিটিগুলিকে যুক্ত করা হয়েছে দিদিকে বলো কর্মসূচির সঙ্গেও। ভোট যত এগিয়ে আসবে কমিটিগুলি সক্রিয় ভূমিকা নেবে। এ ছাড়া প্রতিটি পুরসভার দায়িত্বে রয়েছেন একজন পর্যবেক্ষক, যাঁরা কমিটিগুলির কাজ খতিয়ে দেখবেন।’’ তৃণমূলে নেতৃত্বের দাবি, ঘর ইতিমধ্যেই গুছিয়ে নেওয়া গিয়েছে। এক নেতার কথায়, ‘‘পুরভোট আর লোকসভা নির্বাচন যে এক নয়, বিজেপি যে জনবিরোধী সেটা মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের ফলের সঙ্গে পুর নির্বাচনের ফলের কোনও মিল থাকবে না। বিরোধী দলের উপস্থিতি সেভাবে নজরে পড়লে হয়।’’
তৈরি হচ্ছে বিজেপিও। বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলছেন, ‘‘আসন্ন পুরভোটকে মাথায় রেখে এ দিনই সাঁইথিয়ায় একটি বৈঠক ছিল। সেখানে ঠিক হয়েছে প্রতি পুরসভায় ৫ থেকে ৬ জন নেতৃ্ত্বকে (মূলত জেলার) নিয়ে কমিটি গঠিত হবে। যে কমিটি নির্বাচন পরিচালনা করবে। এ ছাড়া নগর ও বুথ কমিটি ইতিমধ্যেই জনসংযোগ শুরু করেছে। ফল কী হয় সেটা আগামী দিনেই প্রমাণ হবে।’’
বাম শিবির সূত্রে খবর, পাঁচটি পুরসভার প্রতিটি বুথ ধরে সক্রিয় কর্মীদের বাছাই করে তালিকা তৈরির কাজে হাত পড়েছে। চলতি মাসেই সেটা শেষ হবে। সম্ভাব্য প্রার্থী কে হতে পারেন সেই বিষয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘তৃণমূল বিজেপির অন্দরের সমীকরণ মানুষ সব বুঝেছেন। বিজেপি তো সারা দেশে মানুষকে চরম হেনস্থা করে চলেছে। ওয়ার্ডের
মানুষের সমস্যার পাশাপাশি পুরভোটে সেই সব কথাই সামনে রাখা হবে। আমরা তৈরি হচ্ছি।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারী বলছেন, ‘‘এখনও যথেষ্ট সময় আছে। তাছাড়া সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বাম-কংগ্রেস জোট করে লড়ার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy