ডুমুরগ্রামে পুলিশকে ঘিরে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র ।
দলের পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে সন্দেশখালির শাহজাহান শেখের সঙ্গে তুলনা করে অভিযোগ তুললেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্যা। মঙ্গলবার রাতে মুরারই থানার ডুমুরগ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে বিবাদ শুরু হয়। বুধবার দফায় দফায় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী ও তাঁর দলবল গ্রামে ভাঙচুর চালায়। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল প্রধানের স্বামী।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন প্রধানের স্বামী কাজী আশরাফুল শেখের সঙ্গে বর্তমান প্রধান জান্নাতরা মোস্তাফিকের স্বামী টনিক মিয়াঁর দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। পঞ্চায়েত ভোটের আগেও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল। দিন কয়েক আগে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের সামনে আশরাফুলকে ডুমুরগ্রাম অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক করা নিয়ে মঞ্চের সামনেই টনিক গোষ্ঠীর অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। পুরনো সেই দ্বন্দ্বের জেরেই মঙ্গলবার রাতে বিবাদ মাথাচাড়া দেয় বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ছাড়াও কয়েকজনকে মারধরের অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো তৃণমূলের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর তরফেই। মঙ্গলবারই রাতে ঘন্টাখানেক নতুন বাজার মোড়ে অবরোধ ও পরে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান আক্রান্তদের পরিবার। এ দিনও বিক্ষোভে আক্রান্তরা দাবি করেন, বাড়িতে ভাঙচুরের ফলে অনেকেই বাড়িছাড়া রয়েছেন। অবিলম্বে প্রধানের স্বামীকে গ্রেফতার করারও দাবিও করেছেন তাঁরা। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার না করলে বড় আন্দোলন হবে বলেও বহু মহিলা হুঁশিয়ারি দেন।
এ দিন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় আশরাফুল গোষ্ঠীর সমর্থক বলে পরিচিত, ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা নাজমিনা বিবির বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে, মোটরবাইক ভাঙা হয়েছে। নাজমিনার অভিযোগ, ‘‘টনিক নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভাঙচুর চালিয়েছেন। ডুমুরগ্রামকে সন্দেশখালি করতে চাইছেন প্রধানের স্বামী। টনিক শাহজাহানের মত অত্যাচার শুরু করেছেন। মহিলাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দলের নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।’’ ব্যবস্থা না নিলে তিনি দল ছাড়তে বাধ্য হবেন ও টনিক গ্রেফতার না হলে আন্দোলন শুরু হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন নাজমিনা।
যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টনিক। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘আশরাফুলই গ্রামে মিছিল করে অত্যাচার চালান। দলের কোন নেতৃত্বের কথায় তিনি গ্রামে মিছিল করেন? মিছিলের পরেই নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার চালানো হয়। অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’’ টনিকের দাবি, বিষয়টি জেনে আমিই প্ৰথম থানায় ফোন করেছিলাম। প্রধানের স্বামী হওয়ায় তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ টনিকের। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাব। আমি দোষী হলে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করব।’’ আশরাফুল বলেন, ‘‘কোনও মিছিল হয়নি। টনিক এর আগেও গ্রামে ভাঙচুর করেছিলেন। বিষয়টি নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।”
তৃণমূলের মুরারই ১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে গ্রামে শান্তি ফেরানো ও দোষীদের গ্রেফতারের।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প ও টহল চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy