Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Panchayat Election

পঞ্চায়েতে নেই কেষ্ট, ধরেই নিয়েছে তৃণমূল

দলের নেতা কর্মীরা বলছেন, তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকে জেলায় শেষ কথা ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।

গ্রেফতার হওয়ার পরে অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র

গ্রেফতার হওয়ার পরে অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ০৮:২২
Share: Save:

জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যেতে চূড়ান্ত তৎপরতা শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বৃহস্পতিবারই সে বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, সব কিছু ঠিক থাকলে আজ, শুক্রবারই ইডি অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারে। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের জেলা সভাপতির কোনও পরামর্শ বা দিকনির্দেশ মিলবে না সেটা মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে দলের নেতৃত্বের কাছে।

এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, ‘‘কেন কেষ্টকে দিল্লি নিয়ে যাচ্ছে, পঞ্চায়েত ভোট আসছে বলে?’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই তোড়জোড় চলছিল। আসলে বিজেপি তাঁর ছায়াকেও ভয় পায়। তাই অসুস্থ মানুষটাকে দিল্লি নিয়ে যেতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়েছে। আমাদের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ও দলের কোর কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করেই ভবিষ্যতের কর্মপদ্ধতি স্থির হবে।’’

দলের নেতা কর্মীরা বলছেন, তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকে জেলায় শেষ কথা ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু, গত অগস্টে গরুপাচার মামলায় কেষ্ট গ্রেফতার হওয়ার পরে পরিস্থিতি আমূল বদলে যায়। জেলবন্দি জেলা সভাপতিকে যে শেষ পর্যন্ত দিল্লি নিয়ে গিয়ে ইডি জেরা করবেই, এমনটা ধরেই রেখেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতারা। কিন্তু, অনুব্রত একাধিক বার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় তাঁর দিল্লিযাত্রা বিলম্বিত হবে বলে মনে করেছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি আসানসোল আদালতের এজলাস থেকে দলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশে নানা পরামর্শ দিতে শোনা গিয়েছে কেষ্টকে।

গত কয়েক সপ্তাহ অবশ্য সে-সব বন্ধ ছিল। এ বার কেষ্টর দিল্লিযাত্রা সেই প্রশ্নটাকে আরও জটিল করে তুলল বলে মত অনেকের। অনেক তৃণমূল কর্মীর বক্তব্য, অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে পরের ধাপের নেতাদের নিয়ে একটি কোর কমিটি তৈরি হলেও সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। কোর কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘কেষ্টদার দিল্লিযাত্রা যে মোটামুটি অনিবার্য, সেটা ধরেই জানুয়ারিতে জেলায় এসে কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা চার থেকে বাড়িয়ে সাত করেছিলেন দলনেত্রী।’’ ২ ফেব্রুয়ারি বোলপুরে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, অনুব্রতের অবর্তমানে জেলার সাংগঠনিক বিষয়টি তিনি নিজে দেখবেন। কিন্তু দলের একাংশ মনে করছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অনুব্রতা না-থাকাটা অবশ্যই একটা ‘ধাক্কা’। তার উপরে কোর কমিটির এক নেতা ক্রমাগত বিতর্কিত মন্তব্য করে দলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন।

বিরোধীরা অবশ্য অনুব্রতের দিল্লিযাত্রার খবরে খুশি। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ (অষ্টম) মণ্ডল বলেন, ‘‘অনুব্রত জেলে থাকলেও দল পরিচলনা করতে অসুবিধা হচ্ছিল না। সে কথা ওঁর দলের লোকই বলেছেন। কিন্তু, কৃতকর্মের ফল ভুগতেই হবে। অর্থ দিয়ে সব হয় না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলছেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল সবটার সঙ্গে একা যুক্ত, তেমন নয়। ওঁর পাশে যাঁরা সর্বক্ষণ ছিলেন, ওঁর মাথায় যাঁদের হাত ছিল, অনুব্রতকে যাঁরা ব্যবহার করেছেন, তাঁদেরও বিচার হওয়া দরকার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal Panchayat Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy