Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কর্মী নিয়োগ ঘিরেও ‘দ্বন্দ্ব’

শনিবার ঝালদা পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলরের বৈঠকে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলে দাবি করে তীব্র আপত্তি জানান ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের সুরেশ আগরওয়াল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share: Save:

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পুরভোটের বিশেষ দেরি নেই। সেই সময়েই ঝালদায় ফের শাসকদল তৃণমূলের দ্বন্দ্ব বেআব্রু হয়ে পড়েছে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াকে ঘিরে।

শনিবার ঝালদা পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলরের বৈঠকে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলে দাবি করে তীব্র আপত্তি জানান ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের সুরেশ আগরওয়াল। লিখিত ভাবে অভিযোগও জমা দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে শহরে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। সুষ্ঠু ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তো!— এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে ঝালদা পুরবাসীর মুখে মুখে।

লোকসভা ভোটের নিরিখে পুরুলিয়া জেলার তিনটি পুরসভাতেই এগিয়ে বিজেপি। কিন্তু পুরসভাগুলি নিয়ে স্বস্তিতে নেই জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সম্প্রতি রঘুনাথপুর পুরসভায় দলের কাউন্সিলররা পুরপ্রধানকে সরানোর জন্য অনাস্থা আনেন। পরিস্থিতি সামলাতে শেষ পর্যন্ত পুরপ্রধান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। তারই মধ্যে বারবার ঝালদায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব খবরের শিরোনাম হচ্ছে। জেলা নেতৃত্ব কেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না?— প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘ঝালদা শহরে যা ঘটছে তার কিছুটা প্রভাব দলের ভাবমূর্তিতে পড়ছে। এটা অস্বীকার করা যায় না। পরিস্থিতির উপরে আমাদের নজর রয়েছে। দেখছি কী করা যায়।’’

গত সোমবার একটি দৈনিক সংবাদপত্রে ঝালদা পুরসভায় ৩৫টি স্থায়ী পদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া পুরসভার ওয়েবসাইটে দেখা যায়, শূন্যপদগুলিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে ড্রাইভার, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের মতো শূন্য পদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ২০ নভেম্বর আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।

শনিবার বোর্ড অফ কাউন্সিলরের জরুরি সভায় সুরেশবাবু ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ তোলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বোর্ড অফ কাউন্সিলরের সভায় কোনও আলোচনা না করে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। পুরপ্রধান আমাকেও এ ব্যাপারে অন্ধকারে রাখেন। মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন থাকতে পুরসভা কী এ ভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে পারে?’’

যদিও তাঁর তোলা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার দাবি করেন, ‘‘কোনও বেনিয়ম হয়নি। আগে বোর্ড অফ কাউন্সিলরের সভায় কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে অনেকবার আলোচনা করা হয়েছে। তার সমস্ত নথি আমাদের কাছে রয়েছে। সব কিছু সরকারি বিধি মোতাবেক হওয়া সত্ত্বেও প্রাক্তন পুরপ্রধান নিয়োগে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছেন।’’

পুরপ্রধানের দাবি, বর্তমানে কর্মী সঙ্কটে ধুঁকছে ঝালদা পুরসভা। ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কর্মী নিয়োগ হওয়াটা ভীষণ জরুরি। স্থায়ী কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে ‘সুডা’-র কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে প্রথম শ্রেণির দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।

ঝালদা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে পুরসভায় ১০৫টি স্থায়ী শূন্যপদ রয়েছে। তার মধ্যে কিছু দিন আগে ৩৫টি শূন্য পদে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনুমোদন মিলেছে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমরা অনেকগুলি শূন্য পদে নিয়োগের ব্যাপারে অনুমোদন চেয়েছিলাম। তার মধ্যে ৩৫টি পদে নিয়োগের অনুমোদন এসেছে। আগামী দিনে বাকি শূন্য পদে কর্মী নিয়োগ করা হবে।

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, গত প্রায় আড়াই দশক ধরে স্থায়ী পদে কোনও কর্মী নিয়োগ হয়নি প্রান্তিক ওই পুরসভায়। কাজ কর্মের বেশির ভাগটাই চলছে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের উপরে ভরসা করে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে না হতেই তা নিয়ে শাসকদলের মধ্যে এই কাজিয়ায় অসন্তুষ্ট শহরের কর্মপ্রার্থীদের অনেকেই। তাঁদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত সব কিছু সুশৃঙ্খল ভাবে মিটবে তো?

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Conflict Jhalda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy