বলরামপুরে লোক-সংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি এবং যাত্রা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গোলমালের সূত্রপাত। —প্রতীকী চিত্র।
সম্মান নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। এমনকি, প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের জন্য উন্নয়নমূলক কাজের গতি শ্লথ হলেও আঙুল উঠছে তাঁদের দিকে। জেলা পরিষদের তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের একাংশ এমনই অভিযোগে সরাসরি জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন। সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলে জেলা পরিষদের একাধিক জনপ্রতিনিধি জেলাশাসকের কাছে যান। ছিলেন সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, সহ-সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান তথা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হংসেশ্বর মাহাতো, জেলা মহিলা সভানেত্রী তথা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ কর্মাধ্যক্ষ সুমিতা সিংহ মল্ল-সহ ছয় কর্মাধ্যক্ষ।
জেলাশাসক রজত নন্দা বলেন, “জেলা পরিষদের সদস্যেরা এসেছিলেন। তাঁরা কিছু বিষয় জানিয়েছেন। তবে গোটা বিষয়টি প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ বিষয়।” যদিও কাজ করতে গিয়ে জনপ্রতিনিধিরা কোনও সমস্যায় পড়লে তা আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে বলরামপুরে লোক-সংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি এবং যাত্রা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গোলমালের সূত্রপাত। অনুষ্ঠান মঞ্চে বসার আসন নিয়ে অসন্তোষে একাধিক কর্মাধ্যক্ষ অনুষ্ঠান চলাকালীন মঞ্চ ছাড়েন। এক কর্মাধ্যক্ষ বলেন, “ব্লকস্তরের আধিকারিকদের পিছনে আসন দেওয়া কি শোভনীয়! এত দিন ধরে তো নানা সরকারি অনুষ্ঠান হচ্ছে। এমন কখনও নজরে পড়েনি। এখন দেখছি চেয়ারে নামও লেখা হচ্ছে।” হংসেশ্বর-সহ এক বরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধির কথায়, “যদি প্রাপ্য সম্মানটুকু না দেওয়া হয়, তা হলে খামোখা আমাদের অনুষ্ঠানে ডেকে কী লাভ! সেই প্রশ্ন আমরা জেলাশাসকের কাছে রেখেছি।”
এ ছাড়া, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থ খরচ নিয়েও জেলা পরিষদ প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে খবর সূত্রের। ওই খাতে জেলা পরিষদ ৫০ কোটির কিছু বেশি টাকা পেলেও এখনও ৬৯ শতাংশ টাকা পড়ে রয়েছে। নানা প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে। যদিও ঘটনার জন্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের দিকে আঙুল তুলছেন কর্মাধ্যক্ষেরা। এক কর্মাধ্যক্ষের দাবি, জয়পুর ব্লকের একটি পুকুর সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। তিনটি দরপত্র জমা পড়লেও ফের সেই কাজের জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, তিনটি দরপত্র জমা পড়লে সব চেয়ে কম দরকে নির্বাচিত করে ‘ওয়ার্ক-অর্ডার’ দেওয়া হয়। তাঁর প্রশ্ন, “আধিকারিকদের একাংশের জন্য এই দীর্ঘসূত্রিতা। তার দায় কেন আমাদের নিতে হবে!” তাঁর সংযোজন, “জনপ্রতিনিধিদের একাংশ নাকি কমিশন না পেলে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হচ্ছে না বলে খবর রটছে। এমন নানা বিষয়ে আমাদের অসম্মানিত হতে হচ্ছে।”
সহ-সভাধিপতিও বলেন, “আমলাদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করতে হয়। কিন্তু ইদানীং দেখা যাচ্ছে, আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাথায় চাপছে অনেক বেশি। তা যাতে না হয়, জেলাশাসককে দেখতে বলেছি।” তাঁর ক্ষোভ, “মানুষকে জবাবদিহি তো আমাদেরই করতে হবে। ওঁরা (প্রশাসনিক আধিকারিক) যা খুশি করবেন, তা মানা যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy