আহত রামপদ। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে গোলমাল না পাকানোর জন্য তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বারবার সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও বুধবার বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটিতে তৃণমূলেরই কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে তোলা না পেয়ে এক কারখানার ম্যানেজারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠল।
ওই ঘটনায় পুলিশ তিন মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত গোপাল গরাই, ভোলানাথ মণ্ডল ও মহাদেব মণ্ডল গঙ্গাজলঘাটির বাসিন্দা। মারধরে আহত কারখানার ম্যানেজার রামপদ কর্মকারকে গঙ্গাজলঘাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসাকরানো হয়।
এই ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে জেলার শিল্প মহলে। বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের (শিল্প) যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর সরকার বলেন, “এমন ঘটনা জেলায় আগে ঘটেনি। শিল্পের পরিবেশ ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন এখনই কড়া হাতে দুষ্কৃতীদের দমন না করলে কিছু করার থাকবে না।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “অভিযুক্ত তিন জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।” ধৃতদের আজ, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া আদালতেতোলা হবে।
কী ঘটেছিল এ দিন? রামপদর দাবি, এ দিন সকাল প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ সহকর্মীদের সঙ্গে গাড়িতে তিনি গঙ্গাজলঘাটির চৌশালে ফেরোঅ্যালয়ের কারখানায় যাচ্ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কারখানায় ঢোকার কিছু আগে মোটরবাইক নিয়ে আমাদের গাড়ি আটকায় এক যুবক। গাড়ি থামাতেই জনা দশেক যুবক জুটে যায়। তারা জোর করে দরজা খুলে আমাকে টেনে নিয়ে গিয়ে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর শুরু করে। সহকর্মীরা যাতে গাড়ি থেকে নামতে না পারেন, সে জন্য দরজার আগলে দাঁড়িয়েছিল কয়েকজন দুষ্কৃতী।’’ তিনি জানান, কারখানার শ্রমিকেরা ঘটনাটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে ফোন করে খবর দেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়ের করে। রামপদর দাবি, “দুষ্কৃতীদের মধ্যে তিন জনকে আমি চিনতে পারি। তাদের মধ্যে গোপাল নামে এক জন বার তিনেক আমার কাছে তোলা চাইতে এসেছিল। আমি তোলা না দেওয়ায় হুমকিও দেয়।’’ তাঁর আক্ষেপ, প্রকাশ্য রাস্তায় এমন হামলার মুখে পড়ে তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা আতঙ্কিত। এই ভয় নিয়ে আগামী দিনে কারখানায় কাজ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়প্রকাশ করেন।
বিজেপির গঙ্গাজলঘাটি উত্তর মণ্ডলের সভাপতি বিপত্তারণ গরাইয়ের অভিযোগ, “ধৃতেরা তৃণমূল কর্মী। নানা কারখানায় ওরা তোলাবাজি করে।’’ গঙ্গাজলঘাটি ব্লক তৃণমূল সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কর্মকার বলেন, “ধৃতেরা তৃণমূলের বুথস্তরের কর্মী। তবে কোনও অন্যায়কে তৃণমূল সমর্থন করে না। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy