দলছুট: লোবায় অজয়ের চরে দাঁতাল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
মাসখানেক আগে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের জঙ্গল থেকে বোলপুরে ঢুকে পড়া এক দলছুট দাঁতালের উৎপাতে ঘুম ছুটেছিল বন দফতরের। দাঁতাল হাতিকে বাগে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়। এরই মাঝে আবার দলছুট হাতি চিন্তা বাড়িয়েছে বীরভূম বনবিভাগের। এ বার একটি নয়, তিনটি হাতি নিয়ে উদ্বেগ!
বিশেষ করে দুবরাজপুর রেঞ্জের। কারণ, বাঁকুড়া থেকে আসা একটি দলছুট দাঁতালকে নিয়ে দু’দিন ধরে বিপাকে পশ্চিম বর্ধমানের উখড়া রেঞ্জের আধিকারিক ও কর্মীরা। শনিবার দিনভর হাতিটির অবস্থান ছিল অজয় নদের চরে কাশবনে, যেটি পশ্চিম বর্ধমানের গৌরবাজার ও দুবরাজপুরের লোবার মাঝামাঝি অঞ্চল। দুবরাজপুর রেঞ্জের চিন্তা, পাছে লোবায় ঢুকে পড়ে হাতিটি। জমিতে এখন বোরো ধান রয়েছে। তবে সন্ধ্যায় দুবরাজপুরের রেঞ্জ অফিসার কেশব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাতিটি কাঁকসার শিবপুর জঙ্গলের দিকে গিয়েছে।’’
দলছুট হওয়ার কারণে হাতিটি বেশ আক্রমণাত্মক ছিল। এ দিন সকাল থেকেই টের পেয়েছেন অজয়ের ধার ঘেঁষা গোরবাজার গুটুলিয়া গ্রামের দেউল লোহার, গেনু লোহাররা। অজয় ঘেঁষা জমিতে আনাজ চাষ দেখতে এসেই তাঁরা দেখেন হাতি মাঝ জমিতে দাঁড়িয়ে। তাঁদের তাড়া করেই ক্ষান্ত থাকেনি দাঁতালটি, আনাজ পাহারা দেওয়ার ঘরটিও ভেঙেছে। তবে আনাজের তেমন ক্ষতি করেনি। এরপর লোকজন জড়ো হলে তেড়ে গিয়েছে দাঁতালটি। তবে পুলিশ ও বন কর্মীরা সজাগ ছিলেন। উখড়ার রেঞ্জ অফিসার সুদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে রাস্তায় হাতিটি এসেছিল সেই রাস্তায় ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে দিক পরিবর্তন করে ফের হাতি এ দিকে চলে আসবে কি না সেটা অজানা। কারণ, রাতে ১৫-২০ কিমি অতিক্রম করা হাতির কাছে কয়েক মিনিটের ব্যাপার।’’
অন্য দিকে, শনিবার ভোররাতে বাঁকুড়ার আরও দু’টি দলছুট দাঁতাল হাতি আউশগ্রামের অমরাগড়ের শাল জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। তাতেও চিন্তা বেড়েছে বনকর্মীদের। মাসখানেক আগে এখই ভাবে বাঁকুড়ার জঙ্গল থেকে দলছুট একটি হাতি আউশগ্রামের লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল। সেখান থেকে জামতারা, ভালকি মাচান হয়ে অজয় পেরিয়ে শান্তিনিকেতনের জঙ্গলে এসে পৌঁছয়। সে হাতিকে বশে আনতে দিনভর নাকানি-চোবানি খেতে হয় বনকর্মীদের। শেষে ঘুমপাড়ানি গুলি করে হাতিটিকে কাবু করা হয়।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দলছুটদের আটকাতে বাঁকুড়া ও দুর্গাপুর ডিভিশন থেকে একাধিক হুলা পার্টি আনা হয়েছে। সঙ্গে রাখা হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল, মোবিল, পটকা। এর পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সচেতন করতে অজয় নদ তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় বন দফতরের তরফে মাইকিং চলছে। সতর্ক থাকার পাশাপাশি বলা হচ্ছথে, হাতি দেখলে কোনও ভাবেই তাকে উত্ত্যক্ত করা না-হয়।
বীরভূম জেলার বনাধিকারিক (ডিএফও) দেবাশিস মহিমা প্রসাদ প্রধান এ দিন বলেন, “বর্ধমান- বীরভূম সীমানার যেখানে দলছুট হাতি রয়েছে, সেখানে আমাদের কড়া নজরদারি চলছে। লোকালয়ে যাতে হাতি ঢুকে পড়তে না-পারে, তার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy