বিষ্ণুপুরের ওই ইটভাটা। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল নেতার দাদাগিরিতে বন্ধ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া মথুরামহল এলাকার একটি ইটভাটা। ওই ইটভাটায় যাওয়ার এক মাত্র রাস্তার উপর থাকা একটি কালভার্ট তৃণমূল নেতা ভেঙে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। যার জেরে গত তিন মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে সেখানে। ফলে কাজ হারাতে বসেছেন ওই ইটভাটায় কর্মরত প্রায় এক হাজার শ্রমিক। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে আবেদন জানিয়েও সাড়া না মেলায় দিশেহারা ইটভাটার কর্তৃপক্ষ। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই তৃণমূল নেতা।
মথুরামহল এলাকায় গত ২৫ বছর ধরে একটি ভাটায় ইট উৎপাদন করে আসছেন স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, ভাটায় কাঁচামাল নিয়ে আসা এবং উৎপাদিত ইট অন্যত্র সরবরাহের জন্য নিজস্ব মালিকানাধীন রাস্তা থাকলেও পুরসভার বৈধ অনুমতি নিয়ে নিকাশী নালার উপর একটি কালভার্ট তৈরি করা হয়েছিল। মাস তিনেক আগে বিষ্ণুপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি সুনীল দাস সেই কালভার্ট ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। ভাটা কর্তৃপক্ষের আরও অভিযোগ, সরাসরি না হলেও ঘুরপথে মোটা অঙ্কের টাকা চাইছেন ওই নেতা। ইটভাটার ম্যানেজার চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “১৯৯৬ সাল থেকে সমস্ত ধরনের বৈধ নথি নিয়ে ইট ভাটা চালানো হচ্ছে। মাস তিনেক আগে তৃণমূল নেতা সুনীল দাস পুরসভার নিকাশি নালার উপর থাকা একটি কালভার্ট ভেঙে দেওয়ায় বন্ধ রয়েছে ইটভাটা। ভাটা চালানোর জন্য যে টাকা দাবি করা হচ্ছে, তা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা পুলিশ এবং প্রশাসনের সবস্তরেই লিখিতে আবেদন জানিয়েছি।’’ তিন মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকায় কাজ হারিয়ে দিশেহারা অবস্থা সেখানকার শ্রমিকদের। উর্মিলা রাজোয়ার নামের এক শ্রমিক বলেছেন, “আমাদের চাষযোগ্য জমি নেই। গত তিন বছর ধরে এই ইটভাটায় কাজ করে সংসার চলছিল। এখন উৎপাদন বন্ধ থাকায় কাজ নেই।”
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সুনীল দাস কালভার্ট ভেঙে দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও টাকা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, “সরকারি জায়গায় ওই কালভার্ট তৈরি করেছিলেন ইটভাটার মালিক। ওই কালভার্টের কারণে এলাকার জলনিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চাষের জমি জলে ডুবে নষ্ট হচ্ছে। গরিব চাষিদের স্বার্থেই আমি এই কাজ করেছি। তবে আমি কোনও টাকা চাইনি। আমি নিশ্চিত ইটভাটা মালিক এত দিন কাটমানি দিয়েই এমন অন্যায় কাজ করছিলেন।”
যদিও গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিষ্ণুপুর পুরসভা কর্তৃপক্ষ। বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রশাসক অর্চিতা বিদ বলেছেন, “আমি জানার পরই বিষয়টি নিয়ে পুরসভায় আলোচনা করেছি। আমাদের তরফে সবরকম সহযোগিতা করা হবে। অভিযোগখতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy