Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

ব্যাগে এক কেজি সোনা, ট্রেন থেকে নামতেই ধৃত চোর

পুলিশ জানায়, ধৃত বিকাশকুমার রায়ের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গিরিডির কড়াডিহা এলাকায়। বৃহস্পতিবার তাকে সামনে রেখে সাংবাদিক বৈঠক করেন কোয়ম্বত্তূরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার টি সোমশেখর (অপরাধ) ও বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও।

উদ্ধারের পরে। বাঁকুড়া পুলিশ সুপারের অফিসে। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধারের পরে। বাঁকুড়া পুলিশ সুপারের অফিসে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০১:১৯
Share: Save:

শিল্পপতির বাড়ি সাফাইয়ের কাজ করতে ঢুকে প্রচুর সোনা ও টাকা সাফ করে পালিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের এক যুবক। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরের শিল্পপতির বাড়ির সেই পরিচারক গ্রেফতার হল বাঁকুড়ায়। উদ্ধার হল চুরি যাওয়া গয়না ও টাকাও।

পুলিশ জানায়, ধৃত বিকাশকুমার রায়ের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গিরিডির কড়াডিহা এলাকায়। বৃহস্পতিবার তাকে সামনে রেখে সাংবাদিক বৈঠক করেন কোয়ম্বত্তূরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার টি সোমশেখর (অপরাধ) ও বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার দাবি করেন, ‘‘ধৃতের কাছ থেকে প্রায় এক কেজি ওজনের সোনার গয়না ও প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, বুধবার বিকেলে বাঁকুড়া স্টেশন সংলগ্ন ফিডাররোড এলাকা থেকে পুলিশ বিকাশকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বাঁকুড়া আদালতে তোলার পরে ট্রানজিট রিমান্ডে তামিলনাড়ুতে ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেখানকার পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, কোয়ম্বত্তূরের রেসকোর্স এলাকায় কাপড়ের মিলের মালিক শৈলেশের বাড়িতে প্রায় এক বছর ধরে পরিচারকের কাজ করছিল বিকাশ। চুরির ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকালে। কোয়ম্বত্তূরের এসিপি জানান, ঘটনার সময় ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। সেই সুযোগে গোপন জায়গা থেকে সোনার গয়না ও নগদ টাকা বের করে একটি ব্যাগে ভরে চম্পট দেয় বিকাশ। পরে খবর যায় পুলিশের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশিতে নামে কোয়ম্বত্তূরের পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে করতে মঙ্গলবার কোয়ম্বত্তূরের রেল স্টেশনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষায় জানা যায়, সোমবার বিকাশ ট্রেনের টিকিট কেটেছে। তদন্তে জানা যায়, সেই বিকেলে সে এর্নাকুলাম-পটনা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন ধরে রওনা দিয়েছে।’’ তিনি জানান, ততক্ষণে ট্রেনটি ওড়িশা ছাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়েছে। তাঁরা আরপিএফ-কে পুরো ঘটনাটি জানান। পুলিশের একটি দল পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ রাজ্যের পুলিশের সঙ্গেও কোয়ম্বত্তূরের পুলিশ যোগাযোগ করে।

তবে বিকাশ যে মাঝপথে ওই ট্রেন থেকে নেমে যায়নি, সে ব্যাপারেও পুলিশের কাছে কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। তবুও চুরির জিনিসপত্র নিয়ে সে বাড়ি যাচ্ছে ধরে নিয়ে ওই ট্রেনে তল্লাশি চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যায় কোয়ম্বত্তূরের পুলিশ। বিকাশকে ধরতে বাঁকুড়া পুলিশের সহায়তা চাওয়া হয়। বুধবার সকালে পাঠানো হয় তার ছবিও।

ট্রেনটি বাঁকুড়া স্টেশনে ঢোকে সাড়ে দশটা নাগাদ। তার আগে থাকতেই স্টেশনে চলে যায় পুলিশের একটি দল। স্টেশনের বাইরে ও স্টেশন লাগোয়া লালবাজার, ফিডাররোড এলাকাতেও পুলিশের আর একটি দল নজরদারি চালাচ্ছিল। এই কাজে মোট দশ জন পুলিশ কর্মীকে আলাদা আলাদা ভাবে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন সাদা পোশাকে।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ট্রেনটি বাঁকুড়া স্টেশনে থামতেই ট্রেনের ভিতরে বিকাশের ছবি নিয়ে তল্লাশি চালান পুলিশ কর্মীরা। তাঁরা অবশ্য বিকাশের হদিস পাননি। শেষে বাঁকুড়া স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে থানার পথে ফিডার রোডে কাঁধে একটি সবুজ ব্যাগ নিয়ে বিকাশকে হেঁটে যেতে দেখেন পুলিশ কর্মীরা। তখনই তাকে আটক করা হয়। ওই ব্যাগ থেকেই উদ্ধার হয় সোনাদানা ও নগদ টাকা। বিকেলে বিকাশকে গ্রেফতার করা হয়।’’

কোয়ম্বাত্তূরের এসিপি বলেন, “বাঁকুড়ার আগেও বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখে চলছিলাম। কিন্তু বিকাশকে ধরার ঠিক সুযোগ হচ্ছিল না। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, পুলিশ তার পিছু নিয়েছে বলে বিকাশ অনুমান করে ফেলেছিল। তাই সে বাঁকুড়ায় নেমে পড়ে। বাঁকুড়া পুলিশ খুবই তৎপরতার সঙ্গে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কাজে সফল করেছে।” জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “খবর পাওয়ার পরে আমাদের হাতে ঘণ্টা দুয়েক সময় ছিল। তাই বিকাশকে ধরাটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম আমরা।”

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Thief Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy