Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Lack of Information

‘ঘাটতি’ থাকছে তথ্যে, ব্যবস্থা নিতে সমস্যা

জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৩২টি বাল্যবিবাহ আটকানো গিয়েছে। কিন্তু বাল্যবিবাহ হয়েছে এর ঢের বেশি। যার প্রমাণ মিলছে নাবালিক প্রসূতির সংখ্যা বৃদ্ধিতে। শিশুশ্রমের ছবিটাও আশঙ্কার।

শিশু দিবসের সকালে পোষ্যের সঙ্গে এক খুদে। খয়রাশোলের পরাতিয়া গ্রামে।

শিশু দিবসের সকালে পোষ্যের সঙ্গে এক খুদে। খয়রাশোলের পরাতিয়া গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:০২
Share: Save:

বুধবার ছিল শিশু দিবস। জেলা প্রশাসনের তরফে কেন্দ্রীয় ভাবে তো বটেই, বিভিন্ন স্কুল ও হোম, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে এ দিন নানা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এত আয়োজনের মাঝেও প্রশ্ন উঠছে, জেলায় শিশুদের অধিকার কী সুরক্ষিত? প্রশাসনের তরফে পাওয়া তথ্য বলছে, বাল্যবিবাহ, নাবালিকা মাতৃত্বের পাশাপাশি, শিশুশ্রম, অপহরণ, পাচার, নিপীড়ন, যৌন হেনস্থার মতো শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিত্য ঘটে চলেছে। যার অনেক খবরই জেলা স্তরে পৌঁছয় না। কারণ, শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার জন্য সংসদ বা ওয়ার্ড স্তরে গঠিত হওয়া কমিটিগুলি সে ভাবে সক্রিয় নয় বলে সূত্রের খবর। ফলে, ব্যবস্থা নিতেও সমস্যা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৩২টি বাল্যবিবাহ আটকানো গিয়েছে। কিন্তু বাল্যবিবাহ হয়েছে এর ঢের বেশি। যার প্রমাণ মিলছে নাবালিক প্রসূতির সংখ্যা বৃদ্ধিতে। শিশুশ্রমের ছবিটাও আশঙ্কার। জেলার ইটভাটা, চায়ের দোকান থেকে পাথর শিল্পাঞ্চলে অহরহ শিশু শ্রমিকের দেখা মেলে। চলতি অর্থবর্ষের হিসেব না এলেও, ২৩-২৪ অর্থবর্ষে প্রশাসনের তথ্য বলছে, চার জন শিশুর পাচার আটকানো গিয়েছে। ১৫ জন শিশুপুত্র এবং ১৯৭ জন শিশুকন্যার অপহরণের অভিযোগ এসেছিল। উদ্ধার হয়েছে ১৩ জন শিশুপুত্র এবং ১৩৭ জন শিশুকন্যা। হারিয়ে গিয়েছিল ৩৫ জন শিশুপুত্র এবং ১৫০ জন শিশুকন্যা। ২১ জন শিশুপুত্রকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। কন্যাশিশু উদ্ধার হয়েছে ১০৬ জন। পকসো মামলা হয়েছে ৬৪টি। তার মধ্যে কন্যাশিশুর প্রতি যৌন-নির্যাতনের ঘটনা ৬২টি। বাকি দু’জন শিশুপুত্র।

এখানেই শেষ নয়, ওই অর্থবর্ষে শিশুদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ এসেছে ৪১টি। তথ্য বলছে, গত অর্থবর্ষে যত্ন ও সুরক্ষার প্রয়োজন পড়েছে এমন শিশুর সংখ্যা ৩১৯ জন। তার মধ্যে ৫৬ জন শিশুপুত্র, ২৬৩ জন শিশুকন্যা। এর মধ্যে দুঃস্থ এবং কঠিন রোগে ভুগছে এমন ৬০ জন শিশুকে মাসে চার হাজার টাকা অর্থ সাহায্য করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলা স্তরে এ কাজ দেখভাল করার জন্য সমাজকল্যাণ দফতর রয়েছে। তার অধীনে রয়েছে বিশেষ সেল ‘শিশু সুরক্ষা কার্যালয়’। রয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। কিন্তু তার পরেও প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুদের উপরে ঘটে যাওয়া অত্যাচারের ঘটনার হিসেব রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে সূত্রের খবর।

জানা গিয়েছে, শিশুশ্রমের পাশাপাশি বাল্যবিবাহ, পাচার, নিখোঁজ হয়ে যাওয়া, নিপীড়ন, যৌনহেনস্থা, পাচার-সহ শিশু অধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার তথ্য পেতে এবং শিশুকল্যাণে নজরদারি চালাতে জেলা স্তর, ব্লক স্তরে কমিটি তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি সংসদ ও পুর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে শিশু সুরক্ষা সমিতি তৈরির নির্দেশ রয়েছে। কমিটি তৈরিও হয়েছে বলে দাবি। প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, নিচু স্তরের কমিটিগুলির (সংসদ ও ওয়ার্ডভিত্তিক) অধিকাংশই সক্রিয় নয় বা কাগজেকলমে রয়ে গিয়েছে। ফলে, অনেক ঘটনার খবর আসছে না। তাই ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হচ্ছে

জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিরূপম সিংহ বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন সবরকম ভাবে চেষ্টা করছে
যাতে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘিত না হয়। তবে কমিটিগুলি আরও সক্রিয় হলে, এ সংক্রান্ত খবরাখবর পেতে সুবিধা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Children District Administration child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy