লাভপুর জামনা রাস্তার ধারে খেজুর রসের গুড় তৈরি হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য গাছ থেকে আশানুরূপ রস মেলেনি। এর ফলে খেজুর গুড় তৈরির সঙ্গে যুক্ত শিউলিরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাঁদের।
খেজুরের গুড় তৈরিতে যুক্ত শিউলিদের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছে, খেজুরের রসের জন্য আশ্বিন মাস থেকে গাছ কামাতে শুরু করতে হয়। কার্তিক মাসের শেষ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত রস মেলে। সপ্তাহে প্রতিটি গাছ থেকে তিন দিন রস নেওয়া যায়। ৪ দিন বিরাম দিতে হয়। কারণ ওই দিনগুলিতে রসে শর্করার পরিমাণ খুবই কম থাকে। ওই রসে গুড় তৈরি করতে গেলে ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রির শামিল দশা হয়।
গাছ প্রতি তিন দিনে গড়ে মোট ১৮-২১ লিটার রস পাওয়া যেতে পারে। ১০ লিটার রসে গুড় মেলে ১ কেজি। জ্বালানি-সহ আনুসঙ্গিক খরচ হয় কেজি প্রতি ২০-২৫ টাকা। গুড় কেজি প্রতি ১০০-১২০ টাকা দাম মেলে। লিটার প্রতি ২০ টাকা দামে রস বিক্রি হয়।
বীরভূমে খেজুরের গুড় তৈরির সঙ্গে যুক্ত শিউলিদের বড় অংশই নদিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এক মরসুমের জন্য ১৫০০০ টাকায় ১৫০টি গাছ নিয়ে খেজুর গুড় তৈরির ব্যবসা করছেন নদিয়ার দেবগ্রামের শামিম শেখ। ওই গ্রামেরই ভোটার শেখ গাছ প্রতি ১ কেজি হারে গুড়ের চুক্তিতে নানুরের ব্রাহ্মণডিহি গ্রাম লাগোয়া পুকুর পাড়ে ২৫০টি গাছ ঠিকেয় নিয়ে গুড় তৈরি করছে। তাঁরা জানান, ‘‘আমরা বংশ পরম্পরায় এই কাজ করি। আশ্বিন মাস থেকে খুপরি করে পুকুর পাড়ে পড়ে থাকি। খেজুরের গুড় তৈরি করে মাস ছ’য়েক চলে যায়। বাকি সময় দিনমজুরি করে। এ বছর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য ৭-৮ দিন হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। কী করে ওই ক্ষতি সামাল দেব ভেবে পাচ্ছি না।’’
একই আশঙ্কা নদিয়ার গোবিপুরের বাসেদ আলি শেখ, নাকাশিপাড়ার হরোজ খানদেরও। বাসেদ কীর্ণাহারে ১৮০টি গাছ ঠিকা নিয়েছেন। ময়ূরেশ্বরে ২০০টি গাছ ঠিকায় নিয়েছেন হরোজ আলি। তাঁরা জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আশানুরূপ রস মেলেনা। যে টুকু মেলে তাতেও ঘনত্ব থাকে না। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘গুড় তৈরি করতে গেলে খরচে পোষায় না। বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। ফের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হলে কী করে নিজেদের পেট চলবে, কী করেই বা গাছ মালিকদের পাওনা মেটাবো ভেবে পাচ্ছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy