অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অতীতেও একাধিক বার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব ছবি।
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন তৃণমূল পরিচালিত ওই গ্রাম পঞ্চায়েতরই উপপ্রধান। ‘পেটোয়া’ ঠিকাদারদের টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন জানিয়ে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করলেন উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েতের আরও তিন সদস্য। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অতীতেও একাধিক বার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তা নিয়ে বিতর্কের আবহে সরকারি প্রকল্পে টেন্ডার ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেলা গায়েন ও তিন পঞ্চায়েত সদস্য জানান, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে পঞ্চদশ পরিকল্পনায় উন্নয়ন খাতে ২২ লক্ষ টাকারও বেশি বরাদ্দ পেয়েছিল অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েত। তাঁদের অভিযোগ, সেই টাকা দীর্ঘ দিন খরচ করেননি পঞ্চায়েত প্রধান। পরবর্তী সময়ে রাজ্য সরকার এক লক্ষ টাকার বেশি প্রকল্পে ই-টেন্ডার করার নিয়ম চালু করায় আগের তারিখ উল্লেখ করে পেটোয়া ঠিকাদারদের টেন্ডার পাইয়ে দেন পঞ্চায়েত প্রধান। তার বিনিময়ে প্রধান মোট বরাদ্দের ১৫-২০ শতাংশ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ। উপপ্রধান বলেন, ‘‘আমাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দিনের পর দিন এমন অনিয়ম করে যাচ্ছেন। প্রতিবাদ করতে গেলেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি চাই স্বচ্ছ ভাবে পঞ্চায়েত চলুক।’’
অভিযুক্ত প্রধান গুরুদাসের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। যে বা যাঁরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তাঁদের সুস্থতা নিয়ে আমার মনে প্রশ্ন আছে। বারবার কেন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে এবং মিথ্যা জেনেও সেই অভিযোগ বিডিও কেন গ্রহণ করছেন, তা আমি জানার চেষ্টা করব।’’ এ প্রসঙ্গে বিষ্ণুপুর ব্লকের বিডিও শতদল দত্ত বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে উপপ্রধান ও তিন পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই জেলায় অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রথম আমরাই তুলেছিলাম। আজ সেই অভিযোগ তুলছেন তাঁর দলের লোকজন, এমনকি পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরাও। তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে যত অভিযোগই হোক না কেন, উনি দলের উপর তলায় ঠিক মতো কাটমানি পৌঁছে দিতে পারলে ওঁর কোনও শাস্তিই হবে না।’’
এ প্রসঙ্গে শাসকদলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি দলের গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয় নয়। অভিযোগ যে কেউ করতে পারেন। অভিযোগ করলেই তো আর সব সত্যি হয় না। প্রমাণ প্রয়োজন। বেনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy