কিছু দিন আগে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বর্ষপূর্তি অনু্ষ্ঠানে রাজ্যের প্রতিটি কলেজের ছাত্র সংসদকে সরকারের তরফে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরভূমের একাধিক কলেজের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, শিক্ষক দিবসের আগে জেলার কোনও কলেজেই টাকা আসেনি। তবুও প্রায় সব কলেজেই ধূমধামের সঙ্গে হয়েছে শিক্ষক দিবস।
কী করে হল?
উত্তর এক কথায় দিয়েছেন অনেকেই। বলছেন, ‘‘অন্য সময়ে যে ভাবে হত সে ভাবেই— কলেজের তহবিলের টাকায় অথবা পড়ুয়াদের থেকে চাঁদা তুলে। অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন শিক্ষকেরাও।’’ কী কী অনুষ্ঠান হল? কোথাও বাউল, তো কোথাও ‘অ্যান্টি র্যাগিং’ বিষয়ক নাটক, কোথাও শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য বিষয়ক বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আবার কোথাও ছিল পাত পেড়ে মাংস-ভাত। শিক্ষক মহলের এক অংশের অবশ্য মত, ‘‘অন্য বছরগুলির থেকে এ বার জাঁক কিছুটা হলেও বেশি। একটু দেরিতে হলেও টাকাটা তো পাওয়া যাবে। খরচ করতে
অসুবিধে কোথায়?’’
শিক্ষক মহলের অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষক দিবস পালনের মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক মজবুত করা। সেই ভাবনা থেকেই টাকার বরাদ্দ করা। তবে বীরভূমের যে ১৪টি কলেজের (যেগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়) কোনওটিতেই টাকা আসেনি। জেলা তৃণমূলের অন্যতম নেতা তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘পদ্ধতিগত কারণেই হয়তো কলেজে টাকা পৌঁছয়নি। তবে নিশ্চয়ই সে টাকা দ্রুত পাওয়া যাবে।’’
কলেজ ও ছাত্র সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, কোথাও অধ্যক্ষ কোথাওবা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষেরা ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনে কলেজ ফান্ড বা কলেজ উন্নয়ন তহবিল থেকে টাকার ব্যবস্থা করেছেন। কোথাও ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই চাঁদা তুলেছেন। তাতেই শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান হয়েছে।
হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেবাশিস রায় বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে সম্মান তো জানাতে হবে। তাই আপাতত কলেজ ফান্ড থেকে টাকার ব্যবস্থা করেছি। টাকা এলে তা সেখানে আবার দিয়ে দেওয়া হবে।’’ বোলপুর পূর্ণীদেবী চৌধুরী মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুনীলবরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘বিডিও অফিস থেকে টাকা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। শেষমেষ না আসায় ছাত্র সংসদকে অগ্রিম হিসেবে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছি।’’ মুরারই কবি নজরুল মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রদীপকুমার দাসও জানান, ১০ হাজার টাকা কলেজ ফান্ড থেকে দেওয়া হয়েছে। একই ছবি খয়রাশোল কলেজেও। সিউড়ির বীরভূম মহাবিদ্যলয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীরাই চাঁদা তুলে শিক্ষক দিবস পালন করেছে।
সময়ে ছাত্রভোট না হওয়ায় জেলায় এখন নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেই। এই পরিস্থিতিতে আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন তাঁরাই অনুষ্ঠান করেছেন। সাঁইথিয়া অভেদানন্দ মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ চৈধুরী, হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন
সাধারণ সম্পাদক সাগর কুণ্ডুরা এতে অন্যায়ের কিছু দেখছেন না।
তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের জেলা সভাপতি সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, টাকা না এলেও সকলকে যথাযথ মর্যাদায় অনুষ্ঠান করতে বলা হয়েছিল।
তবে ব্যতিক্রমও আছে। সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৃষ্টিধর দাস, বোলপুর কলেজের মুরশেদ আলিরা বলছেন, ‘‘কোনও টাকা পাইনি। কলেজে বর্তমানে ছাত্র সংসদও নেই। তাই কলেজের তহবিল থেকে টাকা দিইনি।’’ অনেকে আবার জানাচ্ছেন, এ বারে টাকা সময়ে না আসায় তেমন খরচ করা হয়নি। সেক্ষেত্রে টাকা এলে পরের বার জাঁক করে এই দিনটি পালন করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy