তন্দ্রা মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
২০১১ সালের আদমসুমারির তথ্য মানলে পুরুষের তুলনায় মহিলার অনুপাত অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে ভাল (সরকারি হিসেবে ১০০০ এর মধ্যে ৯৫০)। তবে এ রাজ্যে কন্যাভ্রূণ হত্যা, কন্যা সন্তানকে অবহেলা করার মতো ঘটনায় ইতি পড়েনি। ব্যতিক্রম নয় জেলাও। এই নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতে সরস্বতী পুজোকেই বাছলেন খয়রাশোলের সরকারি প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক তথা জনপ্রতিনিধি। নিজের বছরখানেকের কন্যা সন্তানকে পুজো করলেন সরস্বতী রূপে। যা দেখে পাড়া প্রতিবেশিরা বলছেন, ‘‘দুর্গাপুজোয় কুমারী পুজোর চল আছে। কিন্তু, যে কারণে নিজের মেয়েকে সরস্বতী সাজিয়ে পুজো করছেন ওই শিক্ষক সেটা শিক্ষনীয়।’’
বাবুইজোর পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম পেঁচালিয়ার বাসিন্দা চণ্ডী মণ্ডল। এলাকার ইসলামকুঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা ছাড়াও খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য বছর একত্রিশের ওই যুবক। ওই শিক্ষক বলছেন, ‘‘প্রায়ই শোনা যায় কন্যা সন্তান হওয়ার পরে এখানে সেখানে ফেলে গিয়েছেন শিশুর মা। তার অন্যতম প্রধান কারণ একাধিক কন্যা সন্তান হলে বা ‘কাঙ্খিত’ পুত্র সন্তানের জায়গায় কন্যা সন্তান হলে এক জন বধূকে তার পরিবারের তরফে লঞ্ছনা গঞ্জনা বা অত্যাচার সইতে হয়। মেয়েদের অমর্যাদা হওয়ার খবরে মনখারাপ হয়। গত বছর জানুয়ারিতে নিজে মেয়ের বাবা হওয়ার পরে সেই অনুভূতি আরও গাঢ় হয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকরা মানছেন, বেসরকারি ইউএসজি ক্লিনিক যাতে লিঙ্গ নির্ধারণ না করে, সে বিষয়ে সচেতনতার প্রচার চলেই। কিন্তু, তার পরেও জেলার কিছু ক্লিনিক তা জানায়। কন্যাভ্রূণ হত্যাও ঘটে। এই নিয়ে সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা জরুরি। মেয়েকে সরস্বতী জ্ঞানে পুজো করা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। স্বামীর এমন সিদ্ধান্তে প্রথমে কিছুটা অবাক হলেও, এক জন মেয়ে এবং মা হিসেবে তিনি যে গর্বিত সেটা জানাতে ভোলেননি পূজা। এই উদ্যোগে খুশি প্রতিবেশীরাও।
যে শিশুকে ঘিরে এত কাণ্ড, তার নাম তন্দ্রা। কিন্তু, দেবী সেজে একবারও তন্দ্রা আসেনি। বরং বেশ আনন্দেই ছিল সে। পুজো শেষে স্পেশ্যাল মেনু, ডালিয়ার খিচুড়ি দোসর মাছভাজা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy