Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Tapan Kandu Murder

Tapan kandu Murder: চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে তপন খুনের পুনর্নির্মাণ

এত দিন প্রত্যক্ষদর্শীদের বারবার ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সে দিন কী ভাবে ঘটনাটি ঘটেছিল, তা খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা হয়েছে।

ঝালদা-বাঘুমণ্ডি রাস্তায় ঘটনাস্থলে তখন চলছে খুনের পুনর্নির্মাণ। বুধবার।

ঝালদা-বাঘুমণ্ডি রাস্তায় ঘটনাস্থলে তখন চলছে খুনের পুনর্নির্মাণ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

প্রশান্ত পাল ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
পুরুলিয়া ও ঝালদা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ ০৬:০৯
Share: Save:

ঝালদা-বাঘমুণ্ডি রাস্তায় কী ভাবে আততায়ীরা ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে গুলি করে পালিয়ে গিয়েছিল, প্রত্যক্ষদর্শীদের উপস্থিতিতে বুধবার সে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল সিবিআই।

১৩ মার্চ বিকেলে এই রাস্তায় ঝালদার গোকুলনগরের কাছে যেখানে ঘটনাটি ঘটে, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন সিবিআইয়ের ফরেন্সিক ও তদন্তকারী দলের সদস্যেরা। এ দিন ফের ডাকা হয় ঘটনার চার প্রত্যক্ষদর্শী যাদব রজক, সুভাষ কর্মকার, সুভাষ গরাই ও প্রদীপ চৌরাসিয়াকে। সূত্রের খবর, তপন কান্দু, নিরঞ্জন বৈষ্ণব এবং এই চার জন ঘটনার দিন এই রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। ঘটনার পুনর্নির্মাণে তপন ও নিরঞ্জনের জায়গায় দুই ব্যক্তিকে শামিল করা হয়। দু’জনের নাম লেখা ছোট প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে আনা হয় তপনের ভাইপো মিঠুন কান্দু এবং ঝাড়খণ্ডের রাঁচির হাসপাতালে যে চিকিৎসক তপনের দেহের ময়না-তদন্ত করেছিলেন, তাঁকে।

সিবিআই সূত্রের খবর, এত দিন প্রত্যক্ষদর্শীদের বারবার ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সে দিন কী ভাবে ঘটনাটি ঘটেছিল, তা খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তপনের শরীরের যেখানে গুলি লেগেছিল, কত দূর থেকে গুলি ছুঁড়লে সে জায়গায় ওই রকম আঘাত তৈরি করে, এ দিন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে এই ধরনের বিষয়গুলি বোঝার চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা।

ঘটনার সময়ে তাঁদের যা অবস্থান ছিল, এ দিন চার প্রত্যক্ষদর্শীকে সেখানে দাঁড়াতে বলা হয়। বিবরণ অনুযায়ী, একটি মোটরবাইকে তিন জন নকল আততায়ী সেখানে পৌঁছন। চালকের মাথায় ছিল হেলমেট। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, ঘটনার দিন এক সঙ্গে হাঁটতে বেরোনো ছ’জনের মধ্যে কে তপন কান্দু, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে মোটরবাইকের কোনও এক আরোহী ‘তপনদা’ বলে ডাক দেয়। তপন তাকাতেই কাছ থেকে তাঁকে গুলি করা হয়। একটি গুলি তাঁর মাথায় লাগে, আর একটি গুলি পেটে। সে সময়ে তাঁর সঙ্গীদের কেউ গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন, কেউ রাস্তা থেকে পাশের খেতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। পায়ে সমস্যা থাকায় এক জন সেখান থেকে সরে যেতে পারেননি। আততায়ীরা তাঁর দিকে গুলি চালালেও, সে গুলিটি ফাটেনি বলে তথ্য মিলেছে, দাবি তদন্তকারীদের। এ দিন ঘটনাস্থলে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সে সব খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। খুনের পুনর্নির্মাণে ‘ভিডিয়ো রেকর্ডিং’ করা হয়। ‘মেটাল ডিটেক্টর’ দিয়ে ঘটনাস্থলে তল্লাশিও চালানো হয়।

এই মামলায় ধৃত সত্যবান পরামানিকের ধাবার তিন কর্মীকে এ দিন জিজ্ঞাসাবাদে ডাকে সিবিআই। সিবিআই সূত্রের খবর, খুনের ছক কোনও ধাবায় বসে তৈরি হয়েছিল বলে খবর রয়েছে। সত্যবানের সঙ্গে যেহেতু আর এক ধৃত, তপনের দাদা নরেন কান্দুর ঘনিষ্ঠতা ছিল, তাই এ বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছেন তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদের পরে, সত্যবানের ধাবার রাঁধুনি অর্জুন রজকের দাবি, ‘‘ধাবায় কে-কে আসত, কোনও বৈঠক হত কি না, এ রকম কিছু বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমি রান্নাঘরে ব্যস্ত থাকতাম। কে কখন আসছেন, আমার পক্ষে দেখা সম্ভব হত না। সে কথাই জানিয়েছি।’’

এ দিন নিরঞ্জন বৈষ্ণবের দাদা নেপাল বৈষ্ণব ও তাঁর ছেলে জয় বৈষ্ণবকেও ডেকেছিল সিবিআই। জয় বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার পরে কাকা কতটা অন্যমনস্ক থাকতেন, এ ধরনের কিছু বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে।’’ গৃহশিক্ষক নিরঞ্জনের এক পড়ুয়ার এবং আর এক পড়ুয়ার অভিভাবককেও ডাকে সিবিআই। ওই অভিভাবক বলেন, ‘‘ঘটনার পরে, নিরঞ্জনের আচরণ বদলে গিয়েছিল কি না বা পড়ুয়াদের কিছু বলেছিলেন কি না, তদন্তকারীরা তা জানতে চাইছিলেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Tapan Kandu Murder CBI Jhalda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy