শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডল যদি আগের মতোই নির্বাচন করাতে চান, তা হলে মহম্মদবাজারে বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধারের মামলায় তাঁর পরিণতি অত্যন্ত খারাপ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার সিউড়িতে এসে তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে এই ভাবেই সরাসরি তোপ দাগলেন শুভেন্দু। জেলার দলীয় কার্যকর্তাদের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জেলা থেকে অন্তত ৭টি বিধানসভা আসনে বিজেপিকে জয়ী করার লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দেন বিরোধী দলনেতা। তার জন্য প্রয়োজনে তিনি জেলা জুড়ে যতগুলি প্রয়োজন, ততগুলি সভা করবেন বলেও ঘোষণা করেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, জেলায় বেশ কিছু মামলা এখনও সিবিআই এবং এনআইএ-র হাতে আছে। সেগুলিতে জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা ফাঁসতে পারেন।
শুভেন্দু আরও জানান, আর জি করের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে এক কোটি সই সংগ্রহ করে রাজ্যপালের কাছে জমা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে দলের তরফ থেকে। ইতিমধ্যেই কুড়ি লক্ষ সই সংগ্রহ করা হয়েছে। শুধু সিউড়ি থেকে সাড়ে সাতাশ হাজার সই সংগৃহীত হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
এ দিন সিউড়িতে বিজেপি কার্যালয় সংলগ্ন শ্যামাপ্রসাদ স্মারক সমিতি আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন শুভেন্দু। নামে বিজয়া সম্মিলনী হলেও কার্যত ’২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি সভায় পরিণত হয় মঞ্চ। শুভেন্দুর আগে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা, রাজ্য সহ সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়েরা জেলায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা বাড়ানোয় বিশেষ জোর দিতে বলেন। বীরভূম সাংগঠনিক জেলায় অন্তত ৫ লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় কর্মকর্তাদের।
এর পরেই কর্মীদের উদ্দেশে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, বীরভূমে আগে ভোট এলেই বিজেপি কর্মীদের ভুয়ো অস্ত্র মামলা বা মাদক মামলায় ফাঁসানো হত। এখন আর আগের মতো নেই। তিনি বলেন, “আমরা জেলায় তৃণমূলের চুরি, গুণ্ডামি বন্ধ করতে পারিনি। আগে বোলপুরে টাকা যেত, এখন কলকাতায় যায়। আগে ৭৫ ভাগ চুরির টাকা জেলায় থাকত, ২৫ ভাগ কলকাতা যেত৷ এখন ৭৫ ভাগ কলকাতায় যায় আর ২৫ ভাগ এখানে থাকে। সরকার বদল হলে আমরা কমিশন বসিয়ে ওদের শিক্ষা ও শাস্তি দুটোই দেব।”
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের জামিন পাওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “এখানকার তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। দু’বছর জেল খাটার পরে জামিন পাওয়ার পরে যদি কেউ ভাবে, ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে গেল, ক্লিনচিট পেয়ে গেল, তা হলে সেটা তাদের ভুল। ওই ঘটনায় যারা গ্রেফতার হয়েছিল, তাদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্ট ইডি বন্ধ করে রেখেছে। ওগুলো এখন খুলবেও না।”
অনুব্রতের উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে শুভেন্দু বলেন, “যে মামলায় ওরা গ্রেফতার হয়েছিল, তাতে ৬ বছর জেল হয়৷ ২ বছর খাটা হয়ে গিয়েছে, আরও ৪ বছর খাটতে হবে৷ মাঝে একটু বিরতি৷ তবে জেল থেকে বেরিয়ে এলেও ওদের হাতে কোনও টাকা নেই। কোনও সম্পত্তি কিনতে বা বিক্রি করতেও পারবে না৷ ফলে, এখন স্থানীয় নেতাদের কাছে টাকা চাইতে হচ্ছে।” এ দিন অনুব্রতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের জেলা স্তরের আর কোনও নেতার কাছেও।
দলীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শুভেন্দুর বার্তা, “বুথ স্তরের সংগঠনকে মজবুত করতে পারলে এবং সংখ্যাগুরু ভোট ভাগ আটকাতে পারলেই জেলায় বোলপুর, নানুর, লাভপুর, ময়ূরেশ্বর, সিউড়ি, সাঁইথিয়া ও রামপুরহাট বিধানসভায় ২০২৬-এর নির্বাচনে জেতা সম্ভব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy