সরেজমিন: বরাবাজারের একটি পাথর খাদানে সভাধিপতি। নিজস্ব চিত্র
অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার পুরুলিয়ার বরাবাজার ব্লকে গিয়ে তিনি নিজে বেশ কিছু অবৈধ পাথর খাদানের হদিস পেয়েছেন বলে দাবি জেলা সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও আধিকারিকদের নিয়ে সভাধিপতি মঙ্গলবার যখন সে সব জায়গায় পৌঁছন, দেখেন খাদান ফাঁকা। কেউ কাজ করছে না। তবে অতগুলি অবৈধ খাদান কী ভাবে চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
পরে বরাবাজার ব্লক অফিসে এ নিয়ে বৈঠক হয়। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘বরাবাজার ব্লক এলাকায় বেশ কিছু পাথর খাদান রয়েছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ খাদান চালানোর অনুমতি নেই। খাদানগুলি বন দফতরের জমি, খাস জমি অথবা রায়তি জমিতে কি না, চিহ্নিত করা হবে। অবৈধ খাদান মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বারবাজার ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খাদান থেকে পাথর তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অথচ, কয়েক কিলোমিটার দূরে ব্লক সদরে প্রশাসনের আধিকারিকেরা থাকলেও কোনও ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয় না, তা নিয়ে অভিযোগ ছিল। এ দিন পাথর খাদান পরিদর্শনে গিয়ে সভাধিপতি দেখেন, বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য গর্তের গায়ে লাগানো রয়েছে সরু তার। খাদানে পড়ে রয়েছে পাথর ভাঙার হাতুড়ি। ডাঁই করা রয়েছে পাথরের চাঁই। পাথর তুলতে তুলতে গভীর খাদ তৈরি হয়ে গিয়েছে অনেকখানি এলাকা জুড়ে।
এ দিন দুপুরে বরাবাজারের লটপদা পঞ্চায়েতের গোহমিকোচা গ্রামের অদূরে একটি খাদানে গিয়ে এমনই ছবি দেখে কার্যত অবাক হয়ে যান সভাধিপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, অনেক দিন ধরেই এখান থেকে পাথর তোলা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের কাছে কোনও খবর নেই!’’ সেখান থেকে তিনি যান তালাডি, কদমপুরের দিকে। সুজয়বাবুর দাবি, যত এগিয়েছেন রাস্তার দুপাশে তাঁর চোখে পড়েছে এ রকম একাধিক খাদান।
তবে কোনও খাদানেই কর্মীদের দেখতে পাননি সভাধিপতি-সহ জেলা পরিষদের সদস্যেরা। কেউ কেউ মন্তব্য করেন, তবে কি তাঁদের আসার খবর ফাঁস হয়ে গিয়েছে! পরে সভাধিপতি বলেন, ‘‘সরকারি সম্পদের নয়ছয় হবে এটা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যাবে না। বেআইনি এই কারবার বন্ধ করা হবে। এ ধরনের কারবার চলতে থাকলে, প্রশাসন সাধারণ মানুষের কাছে আস্থা হারাবে।’’
সভাধিপতি জানান, এ ধরনের বেআইনি কাজ কারবার বন্ধ করে তা বৈধ করা যেতে পারে। তা হলে এখানে কাজ করে মানুষ মজুরি পাবেন। জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে বৈঠক ডেকে একটি সুসংহত পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বরাবাজার ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক এলাকায় তিনটি বৈধ পাথর খাদান রয়েছে। অথচ, ব্লক এলাকায় ২০টির বেশি খাদান চালু রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। বিডিও (বরাবাজার) শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘খাদানগুলির জমির মালিকানা খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছেন সভাধিপতি। আমরা সে কাজ শুরু করছি।’’ তাঁর সংযোজন: যদি চিহ্নিত করা যায় যে কোনও সরকারি কর্মী বা আধিকারিক এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের অভিযোগ যাতে আর না ওঠে, সে চেষ্টা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy