তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ উপাসনা গৃহ। — ফাইল চিত্র।
আগের দুই বুধবার হয়নি বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক উপাসনা। এই বুধবারেও বন্ধ রইল উপাসনা। অনেকে উপাসনায় যোগ দিতে এসেও উপাসনা গৃহ বন্ধ দেখে হতাশ হয়ে ফিরলেন। পরপর তিন সপ্তাহ বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক উপাসনা বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে শুরু করে আশ্রমিকেরা। যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
শান্তিনিকেতনের সূচনাকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি কামনার্থে প্রতি সপ্তাহে বুধবার সাপ্তাহিক উপাসনা হয়ে আসছে শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে। এই উপাসনা পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট কমিটিও রয়েছে বিশ্বভারতীতে। সেই কমিটিই ঠিক করে কোন সপ্তাহে কে পৌরোহিত্য করবেন। তাই বিশ্বভারতীর সাপ্তাহিক উপাসনার একটি আলাদা মর্যাদা সূচনাকাল থেকেই রয়েছে। এই উপাসনায় কখনও ছেদ পড়তে দেখা যায়নি। মাঝে করোনা সংক্রমণের কারণে উপাসনা সাময়িক স্থগিত ছিল। তারপর পুনরায় রীতি মেনে আবারও চলছিল সাপ্তাহিক উপাসনা।
বিশ্বভারতীতে ছাত্র আন্দোলনে জেরে উপাচার্য ২৪ নভেম্বর থেকে গৃহবন্দি হয়ে পড়েন। এর ফলে ৭ ডিসেম্বর উপাসনা বন্ধ রাখেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। একইভাবে ছাত্র আন্দোলন না মেটায় গত বুধবার অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বরও বন্ধ রাখা হয় উপাসনা। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় অনেকেই ভেবেছিলেন এই বুধবার সাপ্তাহিক উপাসনা হয়তো হবে, কিন্তু এ দিনও সেই উপাসনা কার্যত বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে শুরু করে প্রবীণ আশ্রমিকদের একটা বড় অংশকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বলছেন, “আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন থেকে পড়াশোনা করছি তবে থেকে দেখে আসছি প্রতি সপ্তাহে উপাসনা হয়ে আসছে। কিন্তু পরপর তিন সপ্তাহ উপাসনা কেন বন্ধ করা হল তা নিয়ে আমরাও ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছি।” প্রবীণ আশ্রমিক সৌরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন কুমার ঘোষরা বলেন, “যে জিনিস কোনদিন বিশ্বভারতীতে ঘটেনি, তা সমস্ত কিছুই আজ হচ্ছে। শান্তিনিকেতনের নিজস্ব ধারা, মর্যাদা, রীতি রয়েছে, তা আমরা দীর্ঘদিন ধরে পালন করে আসছি। কিন্তু আজ সবই যেন বদলে যাচ্ছে। এতে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত বোধ করছি।” আরেক আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “ কোনও দিন দেখিনি বিশ্বভারতীতে উপাসনা বন্ধ হতে। উপাসনা পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট কমিটিও রয়েছে। উপাচার্য না থাকলেও অন্য আধিকারিকেরা কেন দায়িত্ব পালন করেছেন না? এর থেকে বোঝা যাচ্ছে কোথাও যেন পুরো ব্যবস্থাটাই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে।”
উপাসনা বন্ধ থাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সমাজমাধ্যমেও। সেখানেও ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই। যদি এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy