গতিরোধ: পুরনো বিদ্যুৎস্তম্ভে তৈরি এমন স্পিডব্রেকার নিয়েই আশঙ্কা। নানুর-কীর্ণাহার সড়কে। নিজস্ব চিত্র
দুর্ঘটনা রুখতে তৈরি একের পর এক ‘স্পিডব্রেকার’-এই মরণফাঁদ দেখছেন এলাকাবাসীর একাংশ। আঙুল তুলছেন প্রশাসনিক উদাসীনতার দিকে। তাঁরা অভিযোগ করছেন, অব্যবহৃত বৈদ্যুতিক লাইটপোস্ট দিয়ে তৈরি ওই সব স্পিডব্রেকারে ধাক্কা লেগে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে যানবাহন। হতাহত হচ্ছেন অনেকে। কিন্তু সব শুনেও হাত গুটিয়ে বসে প্রশাসন।
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তায় রাস্তায় দুর্ঘটনা রুখতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিডব্রেকার বসানো হয়েছে। তার পরেও কয়েকটি এলাকার কিছু বাসিন্দা নিজেদের ইচ্ছামতো যেখানে সেখানে পরিত্যক্ত বিদ্যুতের খুঁটি দিয়ে স্পিজব্রেকার তৈরি করেছেন। বিদুতের খুঁটি দিয়ে তৈরি ওই স্পিডব্রেকার কার্যত মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ প্রশাসনের দেওয়া স্পিডব্রেকারে দু’দিক ঢালু। তাতে সমস্যা হয়না যানবাহনের। কিন্তু অধিকাংশ বিদ্যুতের খুঁটির স্পিডব্রেকারের দু’দিক তেমন ঢালু থাকে না। প্রথম দিকে পিচ, পাথর বা মাটি দিয়ে ঢাল করা হলেও কিছু দিনের মধ্যেই তা উঠে যায়। যানবাহন সরাসরি ওই সব বাম্পারে ধাক্কা মারে। অভিযোগ, তাতে অনেক সময় দু’চাকা বা চারচাকা ছোট গাড়ি উল্টে যায়। কয়েক মাস আগে ময়ূরেশ্বরের শিবগ্রাম-ষাটপলশা সড়কে লোকপাড়া আদিবাসীপাড়া সংলগ্ন এলাকায় ওই ধরণের একটি বাম্পারে ধাক্কা মেরে একটি ভটভটি উল্টে গিয়েছিল। তাতে এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েক জন। কুলিয়াড়া গ্রামের বিকাশ বাগদি, লোকপাড়ার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক মোটরবাইক ও ভটভটি ওই বাম্পারে ধাক্কা মেরে উল্টে গিয়েছে। তাতে অনেকে আহত হন।’’ তার পরে গ্রামবাসীদের একাংশ সেটি ভেঙে দিয়েছেন।
শুধু ওই এলাকা নয়, জেলার অনেক রাস্তাতেই একই রকমের স্পিডব্রেকার রয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, কীর্ণাহার-বোলপুর সড়কে কীর্ণাহার হাইস্কুলের কাছে, ওই রাস্তাতেই বালিয়াড়া বাসস্ট্যান্ডে, আমোদপুর-কাটোয়া সড়কে কীর্ণাহার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে, ওই সড়কে দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডে অনেক দিন ধরেই বিদ্যুতের পুরনো খুঁটির স্পিডব্রেকার রয়েছে।
কীর্ণাহারের মোটরবাইক আরোহী শুভজিৎ মণ্ডল, ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা রুখতে তৈরি ওই সব স্পিডব্রেকারই এখন দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটু এ দিক ও দিক হলেই তাতে ধাক্কা লেগে গাড়ি উল্টে যেতে পারে।’’ বাসচালক রতন গড়াই, মানব চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই রকমের স্পিডব্রেকারের জন্য মাঝেমধ্যেই গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। মাঝরাস্তায় খারাপ হয় বাস। সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে যাত্রীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।’’
জেলা পূর্ত (সড়ক) দফতরের কীর্ণাহার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার গোপালরঞ্জন রায় অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘চেষ্টা করেও স্থানীয় বাধায় ওই সব বাম্পার সরাতে পারিনি।’’ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান বলেন, ‘‘এ ভাবে যেখানে সেখানে স্পিডব্রেকার তৈরি করা উচিত নয়। এলাকাবাসী আবেদন জানালে খতিয়ে দেখে প্রশাসনের তরফে স্পিডব্রেকার বসানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy