পুঞ্চায় পরিদর্শন। ছবি: সমীর দত্ত
আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির টাকা সময়ে মিলছে তো— হিন্দিতে করা এই প্রশ্ন শুনে বুঝতে পারেননি উপভোক্তা। পুরুলিয়ার পুঞ্চার কৈড়া গ্রামের নিখিল পালকে পঞ্চায়েত ও ব্লকের কর্মীরা তর্জমা করে বুঝিয়ে দিতে তিনি জানালেন, দু’দফায় ৬০ হাজার টাকা করে, তৃতীয় দফায় ১০ হাজার এবং বাড়ির ভিত খননের জন্য একশো দিনের কাজে প্রায় ১৭ হাজার টাকা মিলেছে। শুনে সন্তোষ প্রকাশ করলেন ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটরিং’ দলের এক সদস্য।
মঙ্গলবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় মোট ছ’টি পঞ্চায়েত ঘুরে একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনা প্রকল্প সম্পর্কে এমনই নানা খতিয়ান নিলেন কেন্দ্রীয় ওই দলের সদস্যেরা। পঞ্চায়েতের কাছে নানা নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখলেন, উপভোক্তাদের সঙ্গে কথা বললেন তাঁরা। তবে পরিদর্শনের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে বিশেষ কিছু বলতে রাজি হননি ওই দলগুলির সদস্যেরা।
বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের বেলুট-রসুলপুর পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজে কর্মদিবস তৈরিতে প্রায়ই রাজ্য স্তরে উপরের সারিতে থাকে। এ দিন সকালে সেখানে পৌঁছয় দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় দল। সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের কর্তারা। পঞ্চায়েতের একশো দিনের কাজের ‘মাস্টার রোল’, দরপত্রের নথি-সহ নানা কাগজপত্র দেখতে চান দলের সদস্যেরা। আবাস যোজনার স্থায়ী তালিকা খুঁটিয়ে দেখেন। কোনও নাম বাদ দেওয়া হয়ে থাকলে, তার কারণ জানতে চান। এর পরে আবাস যোজনার পাঁচটি বাড়ি পরিদর্শন করেন।
বেলুট-রসুলপুরে কালিকাপুরের বাসন্তী মালিকের নির্মীয়মাণ বাড়ি দেখতে গিয়ে যে অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনার টাকা এসেছে, সেটির পাশবই খতিয়ে দেখেন। শৌচাগার তৈরিতে সরকারি টাকা এবং উজ্জ্বলা গ্যাসের সংযোগ পেয়েছেন কি না, জানতে চান। আবাস যোজনার অন্য উপভোক্তাদেরও একই প্রশ্ন করা হয়। একই রকম ভাবে, পাত্রসায়র ব্লকের পাত্রসায়র ও হামিরপুর পঞ্চায়েত পরিদর্শন করেন ওই সদস্যেরা। অধিকাংশ টাকা পাওয়ার পরেও কিছু বাড়ি কেন সম্পূর্ণ হয়নি, সে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। উপভোক্তাদের অনেকে দাবি করেন, বালির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে কাজ শেষ করা যায়নি।
এক উপভোক্তার কথায়, ‘‘বছরখানেক আগে যেখানে এক ঘনফুট বালির দাম ছিল সাতশো টাকা, এখন তা প্রায় চার হাজার টাকা।’’ পরিদর্শন শেষে কেন্দ্রীয় দলের এক সদস্য জানান, প্রাথমিক ভাবে কাজ দেখে তাঁর সন্তুষ্ট। তবে কিছু বিষয় নজরে এসেছে, যেগুলি প্রশাসনকে জানানো হবে।
পুরুলিয়ায় এ দিন দুই সদস্যের দলটি পুঞ্চার পানিপাথর, ন’পাড়া ও ছিরুডি পঞ্চায়েত এলাকা পরিদর্শন করে। একটি ঢালাই রাস্তার কাজ দেখতে দলের সদস্যেরা ন’পাড়া পঞ্চায়েতের নির্ভয়পুর গ্রামে যান। নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে বিশদ তথ্য নেন তাঁরা। তিনটি পঞ্চায়েতেই একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার কাজও ঘুরে দেখেন। পরিদর্শনের তালিকায় না থাকলেও, পথে লাখরা পঞ্চায়েতের বদড়া গ্রামে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের কাজ ঘুরে দেখে দলটি। ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, ওই প্রকল্পের কাজ দেখে সন্তুষ্ট হয়েছেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। পুঞ্চার বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে ওঁরা যে সব তথ্য চেয়েছিলেন, সবই পেয়েছেন।’’
পরিদর্শন শেষে কেন্দ্রীয় দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘দিল্লি গিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দেব। তার আগে এ নিয়ে কথা বলতে চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy