Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Dilip Ghosh

লোকাল ট্রেন নিয়ে মন্তব্য, বিতর্কে দিলীপ

রেল সূত্রে খবর, আদ্রা ডিভিশনে লকডাউনের আগে লোকাল ট্রেন চলত প্রায় ৫০টি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৩
Share: Save:

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে ডিসেম্বর মাস থেকে আদ্রা ডিভিশনে চলতে শুরু করেছে কিছু লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সেই ট্রেনের সংখ্যা অনেকটাই কম বলে অভিযোগ বিভিন্ন মহলের। এই অবস্থায় দাবি উঠেছে আগের মতো আরও লোকাল ট্রেন চালানো হোত।

বুধবার পুরুলিয়া শহরের সাহেববাঁধে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে বাসিন্দাদের কাছে সেই দাবি শুনতে হল বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষকে। দিলীপবাবু তাঁদের আশ্বস্ত করলেও পরে সাংবাদিকদের একাংশের কাছে দাবি করেন, ‘‘পুরুলিয়ার লোকজন লোকাল ট্রেনের উপরে ততটা নির্ভরশীল নন।”

তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিবাদে কার্যত ‘রে রে’ করে উঠেছে অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। তাঁদের দাবি, বিজেপির রাজ্য় সভাপতি পুরুলিয়ার বাস্তব সমস্যা, মানুষজনের জীবনযাপন সম্পর্কে আদৌও ওয়াকিবহাল নন বলেই লোকাল ট্রেনের উপরে জেলার বাসিন্দারা নির্ভরশীল নন বলে মন্তব্য করেছেন।

রেল সূত্রে খবর, আদ্রা ডিভিশনে লকডাউনের আগে লোকাল ট্রেন চলত প্রায় ৫০টি। বর্তমানে ধাপে-ধাপে ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে লোকাল ও প্যাসেঞ্জার মিলিয়ে এই ডিভিশনে ১৬টি লোকাল চলছে।

বাঁকুড়ার সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ তথা লোকসভায় রেলের স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া থেকে পুরুলিয়ার জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো দাবি করেন, ‘‘দিলীপবাবু পুরুলিয়াকে মোটেই চেনেন না। তাই এমন কথা বলছেন।” তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রঘুনাথপুর মহকুমার রঘুনাথপুর ও কাশীপুর এলাকা থেকে দৈনিক কয়েক হাজার শ্রমিক কাজে পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুর ও আসানসোলে যান। কৃষি-শ্রমিকের কাজ করতে হাজার-হাজার লোকজন পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় যান।

বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘এত মানুষ রুটি রুজির জন্য দৈনিক ভিন্ জেলায় লোকাল ট্রেনে চেপেই যান। এখনও পর্যাপ্ত লোকাল ট্রেন শুরু না হওয়ায় সেই শ্রমিকেরা সমস্যার মধ্যে আছেন।’’ কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও। দলের পুরুলিয়া জেলার মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি দাবি করেন, ‘‘বিজেপির নেতারা জনবিচ্ছিন্ন, তা আবার প্রমাণ হল। জেলার কয়েকহাজার বাসিন্দার জীবিকা নির্ভর করে লোকাল ট্রেন চলার উপরে।”

লোকাল ট্রেন চালানোর দাবিতে আন্দোলন করছে এসইউসি প্রভাবিত ‘নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চ’। সেই মঞ্চের নেতা মিহিরকুমার সিংহ-ও বলেন, ‘‘দিলীপবাবুরা পুরুলিয়ার মাটিকে আদৌও চেনেন না। লোকাল ট্রেনের উপরেই গ্রামগঞ্জের বাসিন্দারা নির্ভরশীল।” তাঁর সংযোজন, ‘‘পুরুলিয়ায় সরকারি বাসের সংখ্যা হাতেগোনা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বেসরকারি বাসের ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। সমস্ত লোকাল ট্রেন শুরু না হওয়ায় প্রচুর সমস্যার মধ্যে রয়েছেন বাসিন্দারা।”

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, ‘‘দিলীপবাবু জঙ্গলমহলের মানুষ। তিনি এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে পূর্ণমাত্রায় ওয়াকিবহাল। কাজেই কোন দল কী বলছে, তা আমরা ধর্তব্যের মধ্যে আনছি না। দিলীপবাবু আমাদের সঙ্গে লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আমাদের জে‌লা থেকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে বলেছেন।’’

পরে অবশ্য দিলীপবাবু ব্যাখ্যা করেন, ‘‘সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে লোকাল ট্রেনের গুরুত্ব আছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক করছে। প্রতি মাসে ট্রেন বাড়ছে। আমার মনে হয়, খুব তাড়াতাড়ি এখানেও সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Dilip Ghosh West Bengal Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy