এখান থেকেই উদ্ধার হয়েছিল দেহ। ছবি: তন্ময় দত্ত
মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরে ছ’দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু রামপুরহাটের বাসিন্দা একটি বেসরকারি কোম্পানির ডেলিভারি বয় জাকির হোসেন (৩২) খুনের জট ছাড়াতে গিয়ে কার্যত দিশেহারা তদন্তকারীরা। এবার তদন্তকারীদের একটি বিশেষ দল গঠনের কথা জানিয়েছেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিরাজ খালিদ। জাকিরকে খুনের অভিযোগে তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী মুরারইয়ের চাতরার বাসিন্দা শৌভিক দত্তকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতারের পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ দশ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জাকিরকে অপহরণ করে খুনের সঠিক কারণ, খোওয়া যাওয়া দুই আইফোন-সহ জাকিরের নিজস্ব মোবাইল
ফোন এবং তাঁর মোটরবাইকের হদিশ মেলেনি বলেই পুলিশ কর্তারা সোমবার রাতেও জানিয়েছেন।
শৌভিক রবিবারই জেরার সময় খুনের ঘটনায় জড়িত দুই সঙ্গীর নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানিয়েছিল বলে তদন্তকারীদের দাবি। তারা ঝাঢ়খণ্ডের বাসিন্দা এবং পাথর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এদেরই একজনের স্ত্রীর সঙ্গে জাকিরের ঘনিষ্ঠতার কথাও জেরায় শৌভিক জানিয়েছে বলে জেলা পুলিশের এক কর্তা দাবি করেছেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও কেন পুলিশ ঘটনার কিনারা করতে পারছে না তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শৌভিকের বাবা গৌতম দত্ত এ দিন স্বীকার করেন, মোবাইল বেচাকেনার পাশাপাশি পাথরের ব্যবসাও শুরু করেছিল শৌভিক। ব্যবসার কারণে ঝাঢ়খণ্ডে যাতায়াতও ছিল। বেশ কিছু নতুন বন্ধু বান্ধবও হয়েছিল। যদিও জাকিরকে তিনি চিনতেন না বলেই জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘শৌভিক যদি খুনের সঙ্গে জড়িতই থাকত তাহলে এতদিনে পুরো ঘটনাই স্পষ্ট হয়ে যেত। ও ষড়যন্ত্রের শিকার।’’ তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শৌভিককে সাবধানে জেরা করা হচ্ছে, বারবার মিলিয়ে দেখা হচ্ছে তার বক্তব্যে কোনও অসঙ্গতি থাকে কি না। ফোন কেনার টোপ দিয়ে শৌভিককে অন্য কেউ ব্যবহার করেছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে বীরভূম জেলা পুলিশ খুনের মামলা করে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত ঝাঢ়খণ্ডের পাকুড় জেলার মহেশপুর থানা এলাকার যে পাথর খাদানে জাকিরের দেহ পাওয়া গিয়েছিল সেখানেই যায়নি বলে জানিয়েছে সে রাজ্যের পুলিশ। পাকুড়ের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বীরভূম জেলা পুলিশ মামলা করছে, তদন্ত করছে তাই এই বিষয়ে আমাদের বিশদ কিছু বলার নেই, কিন্তু খুনের কারণ, ব্যক্তিগত আক্রোশ। নইলে নিহতের হাতে সোনার দুটো আংটি বা গলায় জে লেখা সোনার লকেট ও আংটিও ছিনতাই করে নেওয়ার কথা। সেগুলি আমরা উদ্ধার করে রামপুরহাটের তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। ওঁরা কেউ আসেননি। ঘটনাস্থলেও যাননি। ফরেন্সিক দল পাঠানোর বিষয়েও কিছু বলা হয়নি।’’ এ দিন ঝাঢ়খণ্ডের কালোকাঁদা পাথর খাদানে গিয়ে দেখা যায় ঘটনাস্থলে রক্তের ছাপ স্পষ্ট। রাস্তা থেকে যে গর্তে জাকিরকে ফেলা হয়েছিল, প্রায় ১০০ মিটার পর্যন্ত রক্তের দাগ রয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, এখান থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে সুন্দরপাহাড়িতে খুন করা হয়েছিল
জাকিরকে। এতদূর অবধি যে গাড়িতে দেহ আনা হয়েছিল সেটি কোথায় গেল তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
বীরভূমের পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘এই খুনের তদন্তে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁরা ঝাঢ়খণ্ডে যাচ্ছেন। এবার খুব দ্রুত আমরা এই ঘটনার কিনারা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy