Advertisement
E-Paper

কেউ টের পেলেন না কেন, ধন্দ গ্রামে

জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানিয়েছেন, কঙ্কালটি চন্দনারই কি না, তা জানতে দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে।

এই শাড়ি দেখেই কঙ্কালটি চন্দনার বলে দাবি করে পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

এই শাড়ি দেখেই কঙ্কালটি চন্দনার বলে দাবি করে পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৮
Share
Save

গ্রামের বধূ নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পরে পাশের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল কঙ্কাল। এ দিকে, আশপাশের কেউ পচা গন্ধটুকুও পেলেন না— এমনটা কী করে হয়? বাঁকুড়ার ছাতনার মনিকাডিহিতে এখন এই প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা নিতাই কুণ্ডু রবিবার বলেন, ‘‘আমার বাড়ির ঠিক পিছনেই জঙ্গল। যেখান থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই জায়গাটা ছাদে উঠলে দেখা যায়। কুকুর-বেড়াল পচলে গন্ধে তিষ্ঠোতে পারি না। একটা মানুষের দেহ পচল, আর আমরা কেউ কিছু টের পেলাম না! এটা কী করে হয়, বুঝে উঠতে পারছি না।’’

শনিবার বিকেলে মনিকাডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছে কিছু হাড়গোড় এবং একটি খুলি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, গরু চরাতে গিয়ে কয়েক জন সেগুলি দেখতে পান। পাশে পড়ে থাকা সুতির লাল-হলুদ ছাপা শাড়ি দেখে কঙ্কালটি গ্রামের বধূ চন্দনা মালের (৪২) বলে দাবি করেন পরিবারের লোকজন। তার পরে ঘটে গিয়েছে অনেক ঘটনা। চন্দনার ছেলে মানিক মালের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের পড়শি স্বপন মালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিছুক্ষণ পরেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় স্বপনের বাবা, আশি পেরনো বৃদ্ধ অনাথ মালের। হাসপাতাল থেকে জানা গিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানিয়েছেন, কঙ্কালটি চন্দনারই কি না, তা জানতে দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে। রবিবার ঘটনার তদন্তে মনিকাডিহিতে গিয়েছিলেন বাঁকুড়া পুলিশের ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) বিশ্বজিৎ নস্কর, সিআই (বাঁকুড়া সদর) অমিতাভ কোনার ও ছাতনা থানার ওসি বিশ্বনাথ দাস। জঙ্গলের আর কোথাও কোনও দেহাবশেষ পড়ে রয়েছে কি না, তা দেখতে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এক মাসের মধ্যে দেহ পচে কঙ্কাল বেরনোর কথা নয়। তাঁরা মনে করছেন, দেহের মাংস শেয়াল-কুকুরে খেয়ে যেতে পারে। কিন্তু যে জায়গায় কঙ্কাল পড়েছিল, সেখান থেকে দেড়শো মিটার দূরেই জনবসতি। স্থানীয় অনেকে মনে করছেন, কুকুরে দেহ নিয়ে টানা-হ্যাঁচড়া করলে তাঁরা কিছু টের পেতেন। কিন্তু তেমনটা হয়নি বলেই জানাচ্ছেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা। অন্য কোথাও খুন করে জঙ্গলে হাড়গোড় ফেলে যাওয়া হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

রবিবার দিনভর মনিকাডিহিতে পুলিশের আনাগোনা ছিল। গ্রামে ছিল উত্তেজনা। ভিড় সামাল দিতে চন্দনা ও স্বপনের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপনের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়ে রয়েছে। এ দিন বাড়ির কেউ কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। চন্দনার বাড়িতে রয়েছেন তাঁর স্বামী, মেয়ে, ছেলে এবং বৌমা। চন্দনার ছেলে মানিক দাবি করেছেন, ৯ অক্টোবর স্বপনের সঙ্গে তাঁর মা জঙ্গলে পাতা কুড়োতে গিয়েছিলেন। স্বপন তাড়াতাড়ি ফিরে এলেও মা ফেরেননি। তাঁর দাবি, আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজ করতে গিয়ে থানায় ডায়েরি

করা হয়নি। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বপনবাবু ও চন্দনাদেবীর পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

মনিকাডিহি লাগোয়া খড়বনা গ্রামের বাসিন্দা দীনবন্ধু কুণ্ডু বলেন, ‘‘এমন ঘটনা এখানে আগে কখনও হয়নি। কী করে কী হল, আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। পর পর এত কিছু ঘটে গেল, এখন সব ধোঁয়াশা লাগছে।’’

Chatna Skeleton house wife

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।