পুরুলিয়া শহরের স্মরণসভায় রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
সংসদে প্রশ্ন তুললে এখন সাসপেন্ড করা হচ্ছে ‘প্রতিবাদী’ সাংসদদের। অথচ বাসুদেব আচারিয়ার মতো মানুষেরা যখন সংসদে ছিলেন, দেশের স্বার্থে, সাধারণ মানুষের কল্যাণে সংসদের অভ্যন্তরে তাঁদের কণ্ঠ কখনও থেমে থাকেনি। সে সময়ের সঙ্গে আজকের সংসদের ফারাক কোথায়, প্রাক্তন সাংসদের স্মরণসভায় সেই প্রশ্ন তুললেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
রবিবার দলের রাজ্য কমিটির তরফে প্রয়াত নেতার স্মরণে সভা আয়োজিত হয় পুরুলিয়া শহরে মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনের মাঠে। সেখানে সীতারাম বলেন, “উনি (বাসুদেব) শুধু এক জন কমিউনিস্ট নেতাই ছিলেন না, এক সৎ, সজ্জন মানুষ ছিলেন। মানুষের কাছে শিক্ষা নিয়ে কী ভাবে মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করা যায়, গোটা রাজনৈতিক জীবনে তা দেখিয়ে গিয়েছেন। মানুষই ছিল তাঁর অগ্রাধিকার।” বাসুদেবের সতীর্থ হিসেবে দিল্লিতে কাছ থেকে দেখা নানা ঘটনার কথা তুলে ধরেন তিনি। সাঁওতালি ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে সংসদে তাঁর লড়াই বা রেল শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানে তাঁর সংগ্রাম স্মরণীয় হয়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “গোটা দেশের রেল পরিষেবা ছিল তাঁর নখদর্পণে। যে সরকারেরই রেলমন্ত্রী আসতেন, আগে এক বার বাসুদার সঙ্গে বৈঠক করতেন।” দেশের সম্পত্তি রক্ষায় সংসদে বাসুদেবের মতো মানুষের লড়াই থেকে শিক্ষা নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। দলের পলিটব্যুরোর সদস্য বিমান বসু জানান, শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাসুদেব শ্রমজীবী, কৃষিজীবী মানুষের কল্যাণে গোটা জীবন নিয়োজিত করেছিলেন। তিনি বলেন, “সাংসদ হিসেবে বা বিভিন্ন মিটিংয়ে হাজির থাকার জন্য তিনি যে অর্থ পেতেন, দলের রাজ্য কমিটিতে জমা করতেন। এক বার বলেছিলেন, এই অর্থের কিছুটা কি জেলাকে দিতে পারি! শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বিছানায় শুয়েও মানুষের জন্য নিজেকে যুক্ত করার কাজ করে গিয়েছেন।”
পলিটব্যুরোর আর এক সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রও জানান, বাসুদেবের মতো মানুষের আজ অভাব রয়েছে সংসদে। তাঁর কথায়, “মানুষের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে যে শিক্ষা তিনি দিয়ে গিয়েছেন, তাঁর থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে পারি, সেটাই হবে আমাদের তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি সংসদে যে লড়াইয়ের উদাহরণ রেখেছেন, তাঁর মতো এক জনকেও যদি আমরা সংসদে পাঠাতে পারি, তাঁকে প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো হবে।” মানুষের সঙ্গে বাসুদেবের আমৃত্যু যোগের কথা উল্লেখ করেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রও। দলের জেলা সিপিএম সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, “তাঁর (বাসুদেবের) রাজনৈতিক জীবন শুরু এই জেলা থেকে। আমৃত্যু তিনি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। এখানে স্মরণসভার আয়োজন করে দল তাঁকে সম্মান জানাল।” সভায় ছিলেন প্রয়াত নেতার দুই কন্যা, জয়শ্রী ও শুভশ্রীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy