Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal

অনুব্রতের জামিনের পরেও ‘আপন দেশে’ ভয় নেই শিবঠাকুরের, বললেন, ‘মানুষকে তো মরতেই হবে এক দিন’!

অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি বলে দাবি করলেন শিবঠাকুর মণ্ডল। এই নিয়ে কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও।

(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল। শিবকুমার মণ্ডল (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল। শিবকুমার মণ্ডল (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বোলপুর ও দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১৫
Share: Save:

দিল্লির আদালতে গরু পাচার মামলায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর বীরভূমে ফেরা এখন সময়ের অপেক্ষা। জেলা তৃণমূল দফতরে পড়ে গিয়েছে সাজো সাজো রব। বসানো হচ্ছে নেতার ছবি, ফ্লেক্স। এই আবহে কেমন আছেন সেই শিবঠাকুর মণ্ডল, যিনি অনুব্রতের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা করেছিলেন? দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান জানালেন, তিনি আনন্দিতও নন, দুঃখিতও নন। তাঁর কোনও ভয় নেই। কারণ, মানুষকে তো এক দিন মরতেই হবে! তবে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাকে গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি বলে দাবি করেছেন শিবঠাকুর। এই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও।

শিবঠাকুর জানিয়েছেন, অনুব্রতের জামিন নিয়ে তাঁর কিছুই বলার নেই। কারণ, এটি আইনি বিষয়। তবে তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘আমি আনন্দিত নই, দুঃখিতও নই।’’ অনুব্রতের জেলমুক্তিতে তিনি কি ভয় পেয়েছেন? কারণ, তিনিই দুবরাজপুর থানায় অনুব্রতের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ এনেছিলেন। এর পর জেলা পুলিশ অনুব্রতকে গ্রেফতার করে দুবরাজপুর আদালতে পেশ করেছিল। তখন গরু পাচার মামলায় আসানসোল জেলে বন্দি ছিলেন তৃণমূল নেতা। এ বার জামিন পেয়ে বীরভূমে ফিরছেন অনুব্রত। শিবঠাকুর জানিয়েছেন, তিনি মোটেও এতে শঙ্কিত নন। তাঁর কথায়, ‘‘ভয় বলে কিছু নেই। মানুষকে তো মরতেই হবে একদিন! আমি কেন ভয় করতে যাব?’’

শিবঠাকুর মণ্ডল।

শিবঠাকুর মণ্ডল। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।

শিবঠাকুর ছিলেন বালিজুড়ি গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। তৃণমূল সূত্রের দাবি, শিবঠাকুর এক সময়ে তৃণমূলেই ছিলেন। শিবঠাকুর নিজে দাবি করেছেন, এখনও তৃণমূলই করেন তিনি। বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান পদে থাকার সময় তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা ওঠায় শিবঠাকুরকে বাঁচিয়েছিল দল। পরে অবশ্য তাঁকে প্রধানের পদ ছাড়তে হয়। বহিষ্কারও করা হয় দল থেকে। ঠিক তার বছর দু’য়েক পর আবার পঞ্চায়েত প্রধান হন শিবঠাকুর। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে অন্য দলে চলে যাওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করেছিলেন বলে দুবরাজপুরের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে তাঁকে ‘গলা টিপে প্রাণে মারা’র চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত। তাঁর এই অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয় জেলার রাজনীতি। যে দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়, ঠিক তার পরের দিনই আদালতে হাজির করিয়ে অনুব্রতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

শিবঠাকুরের মামলার জেরে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তখনকার মতো পিছিয়ে দিতে হয় ইডিকে। তার প্রেক্ষিতে বিরোধীদের দাবি ছিল, অনুব্রতের দিল্লি যাত্রা আটকাতেই শিবঠাকুরকে ঢাল করেছে শাসকদল। দেড় বছরের পুরনো ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে দায়ের হওয়া অভিযোগের বয়ান নিয়েও বহু প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও শিবঠাকুর দাবি করেছিলেন, ভয়ে তিনি এত দিন অভিযোগ করেননি। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান হন শিবঠাকুরের স্ত্রী লিপিকা মণ্ডল। বিরোধীরা দাবি করে, তাঁর স্ত্রীকে পঞ্চায়েত প্রধান করে শিবঠাকুরকে ‘পুরস্কৃত’ করা হয়েছিল। লিপিকা ওই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, দল ভালবেসে ওই পদ দিয়েছিল তাঁকে।

অনুব্রত বীরভূমে ফিরলে কি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন শিবঠাকুর? তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, দল করলেও দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘জেলা সভাপতি ফিরছেন আমার কী? আমি দলের পদে নেই। আমি শুধু দল করি।’’ তবে সুকন্যার গ্রেফতারি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি। শিবঠাকুর বলেন, ‘‘সুকন্যার সঙ্গে বিজেপি সরকার যা করেছে, খুব নিন্দনীয়। এক জন আইবুড়ো মেয়েকে জেলে পাঠিয়েছে। ওঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বিজেপি ঠিক করেনি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal Birbhum TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy