Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Visva Bharati University

বাইশে শ্রাবণে বিশ্বভারতীর নানা অনুষ্ঠান

কবির প্রয়াণের পর থেকেই এই বিশেষ দিনে বৃক্ষরোপণ উৎসব পালিত হয়ে আসছে শান্তিনিকেতনে। কবিগুরু জীবদ্দশায় বিভিন্ন সময়ে পালন করেছেন বৃক্ষরোপণ উৎসব।

২২ শ্রাবণের সকালে শান্তিনিকেতনের উপাসনাগৃহে উপাসনা।

২২ শ্রাবণের সকালে শান্তিনিকেতনের উপাসনাগৃহে উপাসনা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৪ ০৯:১৬
Share: Save:

১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২শে শ্রাবণ প্রয়াত হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবি চেয়েছিলেন, তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়া হবে শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায়, বিনা আড়ম্বরে। সেই থেকে কবির প্রয়াণ দিবস শোক করে নয় বরং নতুন প্রাণের আবাহনের মধ্যে দিয়েই পালন করে বিশ্বভারতী।

বুধবার ছিল আরও একটি বাইশে শ্রাবণ। প্রথা মেনে ভোরবেলায় গৌর প্রাঙ্গণে বৈতালিক, উপাসনাগৃহে বিশেষ উপাসনা, বৃক্ষরোপণ এবং কবিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যে দিয়ে বাইশে শ্রাবণ পালিত হল বিশ্বভারতীতে। রবীন্দ্রনাথের ভাবনা-চিন্তাকে তুলে ধরেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অরবিন্দ মণ্ডল। কবির প্রয়াণ দিবসের বিশেষ উপাসনায় এদিন আচার্য ছিলেন রবীন্দ্রভবনের ডিরেক্টর অমল পাল। উপস্থিত ছিলেন অরবিন্দ মণ্ডল, শিক্ষক, কর্মী, পড়ুয়া ও আশ্রমিকেরা। বিশেষ উপাসনা, সঙ্গীত পরিবেশন বৈদিক মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে কবিকে স্মরণ করা হয়। এরপর উপাসনাগৃহ থেকে ‘আগুনের পরশমণি...’ গান গেয়ে শোভাযাত্রা করা হয় উদয়নগৃহ পর্যন্ত। সেখানে কবিকে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, প্রধান অতিথি, কর্মী, অধ্যাপক ও ছাত্র-ছাত্রীরা।

কবির প্রয়াণের পর থেকেই এই বিশেষ দিনে বৃক্ষরোপণ উৎসব পালিত হয়ে আসছে শান্তিনিকেতনে। কবিগুরু জীবদ্দশায় বিভিন্ন সময়ে পালন করেছেন বৃক্ষরোপণ উৎসব। তবে তাঁর মৃত্যুর পরে বাইশে শ্রাবণ দিনটিই চিরাচরিত ভাবে বৃক্ষরোপণ উৎসব হিসেবে পালিত হচ্ছে। বিকেলে পুরনো মেলার মাঠ থেকে শোভাযাত্রা করে চারাগাছ এনে রোপণ করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক জয়া মিত্র।

এ বছরও প্রথা মেনে বাইশে শ্রাবণের পরের দিন অর্থাৎ আজ, বৃহস্পতিবার শ্রীনিকেতন মেলার মাঠে হলকর্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে সঙ্গীত ভবনে অনুষ্ঠানও রাখা হয়েছিল। বিশ্বভারতীর পড়ুয়া সুচিত্রা মণ্ডল বলেন, “প্রতিবারই আজকের বিশেষ দিনটি নিয়ে আমাদের আয়োজন থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আজও উপাসনায় যখন মন্ত্র পাঠ হচ্ছিল তখন যেন কবির উপস্থিতি অনুভব করলাম।”

উপাসনায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি পড়ুয়া সঞ্চিতা পামি বলেন, “আমিও উপাসনায় অংশ নিয়েছি। এই মুহূর্তে আমাদের দেশের পরিস্থিতি খুব একটা ভাল নেই। প্রতিবারই এদিনটি আমরা উৎসাহিত থাকি, কিন্তু এ বছর সেই উৎসাহে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশে যে ভাবে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে তা যথেষ্ট বেদনাদায়ক। আমার পরিবারের উপরেও চাপ এসেছে। তাঁরাও ভাল নেই।” তিনি আরও জানান, বলা হচ্ছে হিন্দুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে কিন্তু শুধু যে হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে তা নয়, যাঁরা ক্ষমতাহীন তাঁদের উপরেই চলছে বেশি অত্যাচার।”

ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “কবির প্রয়াণ দিবসে বিগত বছরের মতোই এ বছরও বিশ্বভারতীর নিজস্ব কর্মসূচি রাখা হয়েছিল। বুধবার বোলপুর পুরসভা তথা রাজ্য সরকারের উদ্যোগ কবি প্রয়াণ দিবসে হাজার কণ্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীতের যে অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে তাই সত্যি অনন্য। সকলের প্রচেষ্টাকে আমার সাধুবাদ।”

অন্য বিষয়গুলি:

Visva Bharati Rabindranath Tagore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE