Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Cholera Epidemic

কলেরার দোসর ডায়রিয়া, মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা

ডায়রিয়ায় তাঁর মৃত্যু বলে সরাসরি মানেনি স্বাস্থ্য দফতর। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়েই ওই মহিলা ভর্তি হলেও মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঘমুণ্ডি, পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৬
Share: Save:

কলেরার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বাঘমুণ্ডি ব্লকের কয়েকটি গ্রামে। দোসর হয়েছে ডায়রিয়াও। স্থানীয়দের দাবি, সব মিলিয়ে বাঘমুণ্ডি ব্লকের অন্তত ছ’টি গ্রামে প্রায় ১০০ জন আক্রান্ত। তবে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বুধবার বিকেল পর্যন্ত স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৩ জন আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে।

স্থানীয়দের দাবি, শনিবার পারমটিকর গ্রামের লক্ষ্মীমনি মাছুয়ার (৪৬) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাঘমুণ্ডির পাথরডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মারা যান। মৃতার দেওরঝি বৈশাখী মাছুয়ার বলেন, ‘‘জেঠিমাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে স্যালাইন দেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।’’

যদিও ডায়রিয়ায় তাঁর মৃত্যু বলে সরাসরি মানেনি স্বাস্থ্য দফতর। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়েই ওই মহিলা ভর্তি হলেও মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। অন্য কোন রোগও থাকতে পারে। ওই মহিলার মলের নমুনা পরীক্ষা করার সুযোগ ছিল না। তবে তাঁর বাড়ির এক সদস্য একই উপসর্গ নিয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই মহিলার মৃত্যু আমরাও প্রাথমিক ভাবে ডায়রিয়া বলেই ধরে নিচ্ছি। পরিস্থিতির মোকাবিলায় স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন।’’

স্থানীয়দের দাবি, সপ্তাহ খানেক ধরে বাঘমুণ্ডি ব্লকের বুড়দা-কালিমাটি পঞ্চায়েতের কালিমাটি, পারমটিকর, মাওনিয়া ও সারজুমাতু গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার পেটের সমস্যা ও বমিতে কষ্ট পাচ্ছেন। প্রথমে কালিমাটি মাছুয়ার পাড়ায় রোগের সূত্রপাত। অল্প সময়েই লাগোয়া গ্রামগুলিতে
রোগ ছড়ায়।

পুরুলিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই এলাকায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মহামারি বিশেষজ্ঞ-সহ অন্যেরা গ্রামগুলি পরিদর্শন করেছেন। বিভিন্ন গ্রামের এখনও পর্যন্ত ২৩ জন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন।’’

তবে লক্ষ্মীমনি মাছুয়ারের মৃত্যুর পরেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন। আক্রান্ত গ্রামগুলির টিউবওয়েল, কুয়ো এবং ব্যবহার করা পুকুরের জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বেশির ভাগ নমুনার জল সংক্রমিত বলে পরীক্ষায় জানা গিয়েছে। আক্রান্তদের মলের নমুনাও পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই উৎসগুলির জল আপাতত এলাকাবাসীকে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।’’

ইতিমধ্যেই এই গ্রামগুলিতে স্বাস্থ্য দফতর শিবির শুরু করেছে। কোনও বাড়িতে আক্রান্তের খবর মিললেই স্বাস্থ্যকর্মীরা উপসর্গ দেখে আক্রান্তকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হবে কি না তা দে
খভাল করছেন। কালিমাটি পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা সিংহ সর্দার বলেন, ‘‘সমগ্র এলাকায় মাইকে সচেতনতার প্রচার করা চলছে।’’ আপাতত গ্রামগুলিতে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর গাড়িতে পানীয় জল সরবরাহ করছে
বলে জানিয়েছেন বাঘমুণ্ডির বিডিও আর্য তা।

রোগ নিয়ন্ত্রণে এলেও সংক্রমণ ছড়ানো অব্যাহত রয়েছে স্বীকার করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘আক্রান্তদের মধ্যে চার জনের চিকিৎসা করে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নতুন করে চার জন আক্রান্তকে ভর্তি করতে হয়েছে। যাঁদের ভর্তি করার প্রয়োজন নেই, তাঁদের বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Baghmundi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE