খড়ি হাতে: অক্ষরের সঙ্গে পরিচয়। রবিবার কোতুলপুরে কেওড়াপাড়ায় বয়ে এল খুশির হাওয়া। নিজস্ব চিত্র
আর্থিক কারণে স্কুলে আসা বন্ধ হয়েছিল ওদের। শিক্ষকদের চেষ্টায় শিক্ষার অঙ্গনে ফিরেছে তারা। এ বছর মাধ্যমিকের গণ্ডিও পেরিয়েছে। এ বার নিজেদের এলাকার অভাবী পরিবারের খুদেদের পড়ানোর দায়িত্ব নিল কোতুলপুরের কেওড়াপাড়ার তিন পড়ুয়া। রবিবার থেকে পাড়ার ঠাকুরের থানে নিখরচায় প্রাকৃ-প্রাথমিকের শিশুদের পড়ানো শুরু করল তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেউড়াপাড়ার বাসিন্দাদের বেশির ভাগই দিনমজুর। অনেক মহিলা গৃহ সহায়িকার কাজ করেন। ওই এলাকার বাসিন্দা সমীর কেউড়া, বিজু কেউড়া ও অর্জুন হাজরা এ বছর মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছে। তার পরেই ওরা ঠিক করে, নিজেদের পড়াশোনোর ফাঁকে পাড়ার ছোটদের অক্ষর চেনাবে। পাশে পেয়েছে কোতুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকারকে।
এ দিন কেউড়াপাড়ায় যান কোতুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপঙ্কর গড়াই ও দুর্গাপুরের বেনাচিতির স্কুল শিক্ষক অনীশনাথ বসু। তাঁরা তিন ছাত্রকে উৎসাহ জোগান। কোতুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘ওই তিন ছাত্র দশম শ্রেণির প্রথম ইউনিট পরীক্ষা দেওয়ার পরে স্কুলে আসছিল না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আর্থিক কারণে ওদের পড়াশোনো বন্ধ হতে বসেছে। আমরা ওদের পড়াশোনা করতে উৎসাহ জোগাই। মাধ্যমিক পাশ করে একাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগে ভর্তি হয়েছে ওরা।’’ এলাকার কোনও পড়ুয়া যাতে স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে না নেয়, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়েছে তিন পড়ুয়া। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘এ দিন থেকে ওরা পড়ানো শুরু করল।’’
এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা দিলীপ কেওড়া বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং প্রাথমিক স্কুলে এলাকার বাচ্চারা পড়তে যায় ঠিকই, তবে ওদের পড়াশোনায় নজর দেওয়ার কেউ নেই।’’ শ্রীকান্ত কেওড়া, সুষমা কেওড়া-দের মতো গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘খাবার জোগাড় করতেই দিন কাবার হয়। ছেলেমেয়েদের পড়া দেখানোর সময় কোথায়? পাড়ার মাধ্যমিক পাশ করা ছেলেগুলির জন্য আমরা গর্বিত। ওরা উচ্চশিক্ষিত হোক। আমাদের বাচ্চাগুলিকেও শিক্ষিক করুক।’’ তিন ছাত্র বলে, ‘‘আপাতত সপ্তাহে এক দিন করে ওদের পড়াব।’’কোতুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুদেদের শিক্ষা সরঞ্জাম তুলে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy