হেরিটেজ ক্ষেত্র সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বভারতীর কাছে জবাব তলব করেছে ইউনেস্কো। এর পরেও হেরিটেজ এলাকায় যত্রতত্র টোটো ও গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকা,অস্থায়ী দোকান বসিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠছিল। এ বার টোটো চালক ও অস্থায়ী দোকান সরিয়ে নেওয়ার জন্য হাত জোড় করে অনুরোধ জানাতে দেখা গেল বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীদের।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনের একাংশকে বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। গত বছর বিশ্বভারতী ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেল’ গঠন করে। খোলা হয় সেলের অফিস ঘরও। ঐতিহ্যক্ষেত্রের সীমানা চিহ্নিত করার পাশাপাশি স্থানগুলির সংরক্ষণে কাজও শুরু করে বিশ্বভারতী ও ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।অভিযোগ, এখনও ঐতিহ্যক্ষেত্রের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা থাকছে। ঠিকমতো যান নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। পড়ে থাকছে আবর্জনাও। সূত্রের খবর, এ নিয়েই ইউনেস্কোর কাছে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল। এর প্রেক্ষিতেই ইউনেস্কো চিঠি দেয় বিশ্বভারতীকে।
সেই চিঠি পাওয়ার পরে বিশ্বভারতী বৈঠকে বসে এ বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরও বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রে যত্রতত্র জায়গায় টোটো, গাড়ির ঘোরাঘুরি, অস্থায়ী স্টল, চায়ের কাপ বা দইয়ের ভাঁড় রাস্তার ধারে ফেলে রাখার মতো দৃশ্য প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় রবিবার উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তায় টোটো চালক, অস্থায়ী দোকান ব্যবসায়ীদের হাত জোড় করে সেই স্টল ও টোটো সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা। টোটো নিয়ে আসা পর্যটকদেরও তাঁরা জানাচ্ছেন, এই জায়গাটি ঐতিহ্য ক্ষেত্র, এখানে পায়ে হেঁটে ঘুরুন।
এক নিরাপত্তারক্ষী বলেন, “বিভিন্ন সময় বারণ করা সত্ত্বেও এই রাস্তায় টোটো ও গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। রাস্তার উপরে যত্রতত্র টোটো দাঁড় করিয়ে রাখার পাশাপাশি অস্থায়ী দোকানের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা হারানোর আশঙ্কা করতে শুরু করেছেন অনেকেই। এই হেরিটেজ ক্ষেত্রকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার।” আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “খুবই ভালো কাজ করছে নিরাপত্তারক্ষীরা। তবে, কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে আরও বেশি সজাগ ও সতর্ক হতে হবে। তবেই হেরিটেজ ক্ষেত্র ঠিক মতো রক্ষিত হবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)