Advertisement
E-Paper

কী ভাবে চলবে পঞ্চম শ্রেণি, ‘সংশয়’

প্রাথমিক স্কুলেগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি শুরু হবে তারা জানান, প্রতি চক্রে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক এ বিষয়ে একটি করে বৈঠক করেছেন।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪০
Share
Save

সরকারি নির্দেশিকা অনুয়ায়ী আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই জেলার ১১৯টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন শুরু হওয়ার কথা। ২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হওয়ার কথা। কিন্তু ভর্তি প্রক্রিয়া কী ভাবে সম্পন্ন হবে? বই কখন আসবে? পর্যাপ্ত শিক্ষক ও অন্য পরিকাঠামো না-থাকলে কী ব্যবস্থা হবে?— এমন নানা প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি বলে ওই প্রাথমিক স্কুলগুলির অভিযোগ। তবে জেলা শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, ভাবনার কিছু নেই। ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর আগেই সমস্ত নির্দেশিকা স্কুলগুলিতে পৌঁছে যাবে।

যে প্রাথমিক স্কুলেগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি শুরু হবে তারা জানান, প্রতি চক্রে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক এ বিষয়ে একটি করে বৈঠক করেছেন। সেখানে স্কুলের নাম থাকলেও এখনও অনেক কিছু স্পষ্ট হচ্ছে না। তবে জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, কিছু স্কুলে শিক্ষকের সমস্যা রয়েছে। নেই পঞ্চম শ্রেণিতে পাঠদানের জন্য অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ। আবার এমন কিছু স্কুল রয়েছে, যেখানে শিক্ষক চাকরি পেয়ে স্কুল ছেড়েছেন। পাশাপাশি, চতুর্থ শ্রেণির তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের পর যে স্কুলে ছেলেমেয়েরা পড়ত, সেই স্কুলেই থাকবে নাকি উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হবে, এ নিয়ে সংশয়ে অনেক অভিভাবকও।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়ক বলেন, ‘‘২৭ সালের শিক্ষাবর্ষের মধ্যে সমস্ত প্রাথমিক স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণি চালু হবে। যে স্কুলগুলিতে পরিকাঠামো ভাল এবং অন্তত পাঁচ জন করে শিক্ষক আছেন, সেই স্কুল গুলিকে আগে বাছা হয়েছে। পরিকাঠামো গড়তে টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে জেনেছি।’’

প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি চালু করার ব্যাপারে ১৯ সালের বছরের গোড়া থেকেই উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য সরকার। প্রথম দফায়, ২০ সালে জেলার ২,৪০২টি স্কুলের মধ্যে ৬১৯টি প্রাথমিক স্কুলকে পঞ্চম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। এ বার আরও ১১৯টি স্কুলকে বাছা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি না-থাকলেও শিক্ষক, শিক্ষিকাদের একাংশ জানান, প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি ক্লাস ছিলই। তার সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত হলে নতুন শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষক— দুই চাই। যেমন মুরারই চক্রের আম্ভুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭০০-এর বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছে। প্রধান শিক্ষক নিয়ে আট জন শিক্ষক ছিলেন। দু’জন শিক্ষককে অন্য স্কুল পাঠানো হয়েছে। এত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী নিয়ে এখন হিমশিম অবস্থা বলে অভিযোগ। এর উপরে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত হলে শিক্ষার্থী আরও বাড়বে। প্রধান শিক্ষক মহম্মদ গোলাম রসুল বলেন, ‘‘পরিকাঠামো ও শিক্ষক দু’টিতেই সমস্যাই আছে। দুই শিক্ষককে ফেরত চেয়ে আবেদন করেছি। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষও নেই।’’

দুবারজপুর চক্রের চিনপাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ও পঞ্চম শ্রেণিতে উন্নীত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক দীপক চন্দ্র গড়াই বলেন, ‘‘স্কুলে ২৫০ পড়ুয়া এবং আমাকে নিয়ে সাত জন শিক্ষক ছিলেন। এক জন আপার প্রাইমারিতে চাকরি পেয়ে চলে গিয়েছেন। ফলে পঞ্চম শ্রেণি হলে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত একই রাখতে আরও শিক্ষক চাই। চাই অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষও।’’ একই অবস্থা দুবরাজপুরের কুখুটিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ অতিরিক্ত কিছুই নেই। তবে সম্পূর্ণ পরিকাঠামো রয়েছে এমন স্কুলও রয়েছে। খয়রাশোল চক্রের বড়রা হরিজন প্রাথমিক পঞ্চম শ্রেণি চালু করতে কোনও সমস্যা নেই। জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল হক কাদেরী।

তবে অধিকাংশ স্কুলই বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছে। তাঁদের অনেকের কথায়, দূরের মাধ্যমিক বা জুনিয়র হাই স্কুলে গিয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার চেয়ে নিজের স্কুলে আরও একটা বছর পড়াশোনা করতে পেলে স্কুল ছুট কমবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suri

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}