শোক: বাঁকুড়ার জয়পুরের আশুরালি পূর্বপাড়ায় মৃত তরুণের বাড়িতে পরিজনেরা। (ইনসেটে) অভিজিৎ দে।—নিজস্ব চিত্র
খেলার মাঠে চোট পেয়ে মৃত্যু হয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া তরুণ গোলরক্ষকের। তাঁর দেহ এলাকায় ফিরতেই স্কুলে চড়াও হল ক্ষুব্ধ জনতা। ভাঙচুর করা হল এক শিক্ষকের মোটরবাইক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার জয়পুরের আশুরালি যতীশচন্দ্র হাইস্কুলের ঘটনা। মৃত ছাত্রের নাম অভিজিৎ দে (১৮)। বাড়ি আশুরালি পূর্বপাড়ায়।
স্কুলভিত্তিক ফুটবলের জেলা স্তরের প্রতিযোগিতা চলছে বাঁকুড়ায়। সোমবার ছিল জয়পুর ব্লক স্তরের ফাইনাল খেলা। মুখোমুখি হয়েছিল আশুরালি যতীশচন্দ্র হাইস্কুল এবং মাগুরা হাইস্কুল। মাগুরা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ দত্ত ছিলেন দর্শকাসনে। তিনি জানান, তখন বিকেল ৩টে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শেষ হতে মিনিট দশেক বাকি। আশুরালি স্কুল ২-১ গোলে এগিয়ে। এমন সময় আশুরালি দলের বক্সের কাছে বল পৌঁছে যায়। গোল করতে এগিয়ে যান মাগুরা স্কুলের স্ট্রাইকার। গোল বাঁচাতে এগোন আশুরালির গোলরক্ষক অভিজিৎ। দু’জনের ধাক্কা লাগে। গোল অবশ্য হয়নি।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে অভিজিতের মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে দেখা যায়। অনেকে ভেবেছিলেন, ঠোঁট বা জিভ কেটে গিয়ে থাকতে পারে। আশুরালি স্কুলের পরিচালন কমিটির সদস্য ইগরাম জমাদার জানান, খেলা থামিয়ে দ্রুত অভিজিৎকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রথমে জয়পুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল। সেখান থেকে তাঁকে সরানো হয় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে। রাত ৮টা নাগাদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাঁকুড়া মেডিক্যালের ‘আইসিইউ’-তে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের। খেলায় ততক্ষণে ২-১ ফলেই জিতেছে তাঁর স্কুল।
মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিজিতের শ্বাসনালির ভিতরে গুরুতর চোট লেগেছিল। তার থেকেই মৃত্যু। ময়নাতদন্তের পরে, মঙ্গলবার বিকেলে জয়পুরে তাঁর দেহ আসে। সন্ধ্যায় ক্ষুব্ধ জনতা স্কুলে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিমলচন্দ্র দিগার বলেন, ‘‘এক শিক্ষকের মোটরবাইক ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’’ বুধবারও স্কুলে ছিল পুলিশি টহল। এ দিন প্রার্থনার পরে নীরবতা পালন করে অভিজিতের স্মরণে স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
সোমবার দুর্ঘটনার পরেই খেলা থামিয়ে দেওয়া হয়। জয়ী ঘোষণা করা হয় আশুরালি স্কুলকে। বন্ধুর মৃত্যুতে স্তব্ধ অভিজিতের সতীর্থ সৌমেন মণ্ডল, রাহুল মণ্ডল, স্বরূপ রুইদাসেরা। আশুরালি স্কুলের শিক্ষক সব্যসাচী খাঁ বলেন, ‘‘ব্লক স্তরে প্রথম বার কাপ জিতল আমাদের স্কুল। কিন্তু কোনও খুশিই রইল না। ছেলেটা বলেছিল, এ বার কাপ আনবে। ওকেই ধরে রাখা গেল না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy