Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Death

খুন করে অ্যাসবেস্টসের ছাদে চট দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল শিবমের দেহ, পারিবারিক রেষারেষি থেকেই শিশু খুন!

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভু পেশায় নাপিত। তাঁর সেলুন রয়েছে। সেলুনের এক কর্মীর সঙ্গে শম্ভুর অবিবাহিতা প্রতিবেশীর সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে শম্ভু এবং ওই মহিলার পরিবারের মধ্যে মাস ছয়েক আগেও অশান্তি হয়।

ছাদে রাখা ছিল চটে জড়ানো দেহ।

ছাদে রাখা ছিল চটে জড়ানো দেহ। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৪০
Share: Save:

পারিবারিক বিবাদের কারণেই শিবম ঠাকুর (৫)-কে খুন করা হয়েছে? শান্তিনিকেতনের শিশু-খুনে প্রাথমিক তদন্তের পর এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই শিশুকে খুন করে অ্যাসবেস্টসের ছাদে তুলে দেওয়া হয়েছিল দেহ। শুধু তাই নয়, দেহ যাতে কারও চোখে না পড়ে সে জন্য তা ঢেকে রাখা হয়েছিল চট দিয়ে!

রবিবার সকালে বাড়ি থেকে বিস্কুট কিনতে বেরিয়ে নিজের পাড়া থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল শান্তিনিকেতনের মোলডাঙার বাসিন্দা শম্ভু ঠাকুর এবং মমতা ঠাকুরের ছোট ছেলে শিবম। মঙ্গলবার জানা যায়, ওই শিশুর দেহ পড়ে রয়েছে শম্ভুদের এক প্রতিবেশীর বাড়ির ছাদে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ইটের দেওয়াল এবং অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দিয়ে তৈরি ওই বাড়ির চালে উঠে উদ্ধার করে শিশুটির দেহ। দেখা যায়, অ্যাসবেস্টসের ছাদে বস্তাবন্দি অবস্থায় রয়েছে শিবমের দেহ। বস্তার আবরণ সরিয়ে উদ্ধার করা হয় ওই মৃতদেহ। তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, প্রতিবেশী ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আটক করা হয়েছে ওই মহিলার মাকেও।

বাড়ির ছাদে চলছে ভাঙচুর।

বাড়ির ছাদে চলছে ভাঙচুর। — নিজস্ব চিত্র।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভু পেশায় নাপিত। এলাকায় তাঁর একটি সেলুন রয়েছে। সেই সেলুনেরই কর্মী হাবল বাউড়ির সঙ্গে শম্ভুর অবিবাহিতা প্রতিবেশী (যাঁর বাড়িতে শিবমের দেহ পাওয়া গিয়েছে)-র সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে শম্ভু এবং ওই মহিলার পরিবারের মধ্যে মাস ছয়েক আগে অশান্তিও হয়। ওই মহিলা হাবলকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু সেই সময় হাবলকে বিয়ে করতে নিষেধ করেন শিবমের বাবা শম্ভু। এর পর দু’জনের বিয়ে হয়নি। এ নিয়ে হাবলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেন ওই মহিলা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বর্তমানে জেলে রয়েছেন হাবল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, তখন থেকেই শম্ভুর পরিবারের উপর আক্রোশ তৈরি হয় ওই মহিলার। সে কারণেই তিনি শিবমকে খুন করেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এর পর আচমকা শিবম নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় সকলের সন্দেহ গিয়ে পড়ে ওই মহিলার উপরে। স্থানীয়েরা পুলিশে খবর দেন। এর পর পুলিশ এসে শিবমের দেহ উদ্ধার করে।

বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে ছ’টি দল তৈরি করে শিশুটিকে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করেছি। ওই বাড়িটিতেও তল্লাশি চালানো হয়। ছাদেও তল্লাশি করা হয়েছিল। গ্রামবাসীরাও খোঁজ করে। স্নিফার ডগ আনা হয়েছিল। আমরা আর কোথায় কোথায় খুঁজব তারও পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু ওই ছাদে যে দেহ থাকবে তা ভাবতেই পারিনি। শিশুটিকে আমরা বাঁচাতে পারিনি, এটা দুর্ভাগ্যজনক। ওই মহিলাকে জেরা করে দেখা হবে এর পিছনে আর কেউ আছে কি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death Murder santiniketan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy