(বাঁ দিকে)জয়ী নির্দল প্রার্থী সামসুন্নিহার বিবি। পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী রেজিনা বিবি। —নিজস্ব চিত্র।
সম্পর্কে তাঁরা জা। পরিবারের সুখ-দুঃখে একে অন্যের পাশে থাকেন। কিন্তু, ভোটের ময়দানে ছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী। দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির ১৩ নম্বর আসনে তৃণমূলের প্রার্থী রেজিনা বিবিকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসলেন তাঁরই জা, নির্দল প্রার্থী সামসুন্নিহার বিবি। ২৫৫০ ভোটে জয়ী হয়েছেন সামসুন্নিহার।
লোবা এলাকার ওই পঞ্চায়েত সমিতি আসনে রেজিনাকে শাসকদল প্রার্থী করার পরে সেই আসনেই নির্দল (আদতে তৃণমূলের গোঁজ) হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন সামসুন্নিহার। দুই জা-এর ‘লড়াই’ ঘিরে এলাকার মানুষও কৌতূহলী ছিলেন। ভোটের প্রচারে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়েননি। তবে, সেষ হাসি হাসলেন নির্দল সামসুন্নিহার। বীরভূমে তৃণমূলের এমন দাপুটে ফলের মাঝে নির্দল প্রার্থীর জিতে যাওয়ায় অস্বস্তি রয়েছে তৃণমূলে। দলের এক নেতা আড়ালে বলছেন, ‘‘সমস্যা ছিল ওই আসনটিকে নিয়েই।’’ তবে, জেতার পরেও অতি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে চান না সামসুন্নিহার। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ চেয়েছেন জিতেছি। বাহ্যিক প্রকাশ না করাই ভাল। কোনও অশান্তি হোক চাই না।’’
এলাকা সূত্রে খবর, লড়াইটা যত না দুই জায়ের, তার থেকেও বেশি ছিল লোবা পঞ্চায়েতের ঝিরুল গ্রামের বাসিন্দা এবং দুই ভাই শেখ জাহাঙ্গির ও তেজাম্মল মণ্ডলের। দলের আশ্বাস সত্ত্বেও টিকিট না মেলায় খুড়তুতো ভাই জাহাঙ্গিরের স্ত্রী রেজিনার বিপক্ষে নিজের স্ত্রী সামসুন্নিহারকে প্রার্থী করেন তেজাম্মল। সেই লড়াইয়ে জয় পেলেন তেজাম্মলও।
তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ দুই নির্দল (গোঁজ) প্রার্থী জয় পেয়েছেন খয়রাশোলের লোকপুরেও। এই দু’জনকেই সাসপেন্ড করেছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তার পরেও তাঁরা দু’জন জয়ী হওয়ায় কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছে দল। তাঁদেরই এক জন লোকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান টুকুরানি মণ্ডল। এ বার ভোটে দল টিকিট না-দেওয়ায় তিনি লোকপুরের শিবপুর থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতে গিয়েছেন। দলের নির্দেশ অমান্য করা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য টুকুরানিকে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। তবু, তিনি লড়াই থেকে সরেননি। শেষ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ ভোটে জয়ী হয়েছেন। তৃণমূলের প্রার্থী ওই সংসদে তৃতীয় স্থান পেয়েছেন। দ্বিতীয় বিজেপি।
১৪ আসন বিশিষ্ট লোকপুর পঞ্চায়েতের ৮টি আসন জিতে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। মাত্র ৪টি আসন পেয়েছে শাসকদল। দু’টি আসন পেয়েছে নির্দল। সেই তালিকায় টুকুরানির সঙ্গে রয়েছেন টুম্পা চৌধুরীও। দুই নির্দল তথা গোঁজ প্রার্থী জিতে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব।
এলাকা সূত্রে খবর, টুম্পার স্বামী অভিজিৎ চৌধুরী লোকপুরের বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। ওই আসনটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় চেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রীকে প্রার্থী করুক দল। প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় টুম্পা নির্দল প্রার্থী হন। দল তাঁকেও সাসপেন্ড করে। দল থেকে সাসপেন্ড দুই জয়ী নির্দল প্রার্থী কি এ বার গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকবেন? টুম্পার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। টুকুরানির দাবি, ‘‘এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy