বিস্ফোরণে ফেটে গিয়েছে ঘরের দেওয়াল। শুক্রবার মাড়গ্রামের একডালা গ্রামে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
বগটুই হত্যাকাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে মজুত বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশ দেন পুলিশের আধিকারিকদের। কিন্তু তার পরেও সিউড়ি, সাঁইথিয়া, মুরারই, মাড়গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাঁইথিয়া ও মাড়গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় নাবালক জখম হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এর ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও অশান্তির ছায়া দেখছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। সিপিএমও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসকদল গ্রামে বোমা মজুত করছে বলে অভিযোগ করেছে।
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘বগটুই কাণ্ডের সময় খোদ মুখ্যমন্ত্রী এলাকায় দাঁড়িয়ে রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তাদের রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামে মজুত বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে বলার পরে কয়েক দিন পুলিশের তৎপরতা দেখা গিয়েছিল। তার পরে খোদ রাজ্যের পুরমন্ত্রী জেলায় থাকাকালীন বোমের আওয়াজ পেয়ে চমকে গিয়েছিলেন। আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য তৃণমূল গ্রামে গ্রামে বোমা মজুত করছে। যার জন্য নিরীহ বালকেরা বোমা ফেটে জখম হচ্ছে।’’
অন্য দিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ বলেন, ‘‘তৃণমূলের মজুত করা বোমা উদ্ধারে পুলিশ ব্যর্থ। পুলিশ তো তৃণমূল নেতাদের দলদাসে পরিণত হয়েছে। ফলে, তৃণমূলের নেতা, কর্মীদের বাড়িতে মজুত থাকা বোমা উদ্ধার করতে পারছে না। একডালার ঘটনা তারই প্রমাণ দিচ্ছে।’’
বিজেপি এবং সিপিএম উভয় দলেরই অভিযোগ সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে প্রতিটি গ্রামে তৃণমূল কর্মীরা বোমা মজুত রাখার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং অবাধ করতে গেলে পুলিশ প্রশাসনকে আরও বেশি সক্রিয় সদর্থক ভূমিকা পালন করার দাবি জানায় উভয় দল।
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘সন্ত্রাস চালিয়ে পঞ্চায়েত দখলের জন্য বাড়িতে বোমা মজুত রেখেছে তৃণমূল।’’ যদিও তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘কোনও তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেনি। তৃণমূল হলে জানতে পারতাম। পুলিশ পুলিশের কাজ করছে।’’ তিনি এ কথা বললেও একডালা গ্রামের বাসিন্দা তথা স্থানীয় কালুহা পঞ্চায়েতের প্রধান আকাল লেট বলেন, ‘‘ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলাম না। যাঁর বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তিনি এক জন তৃণমূল কর্মী।’’
তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন,‘‘এই সমস্ত বোমা মজুতকারীরা দুষ্কৃতী ছাড়া কেউ নয়। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে যথারীতি ব্যবস্থা নিয়েছে। বিরোধীরা অপপ্রচার করছে। আর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে পুলিশ ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গা থেকে বোমা, বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করেছে। এবং অপরাধীদের গ্রেফতার করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি বলেন, ‘‘জেলাতে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ লাগাতার কাজ করে চলেছে। মাড়গ্রামের একডালাতে কোনও বাড়ির মালিক যদি ভাঙা বাড়ির মধ্যে বোমা লুকিয়ে রাখে, তা হলে সেটা পুলিশের পক্ষে উদ্ধার করা মুশকিল। পুলিশ মাড়গ্রামের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে মামলা রুজু করেছে এবং এক জনকে গ্রেফতারও করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy