Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

মুষল ধারা বৃষ্টিতে ভাঙল রাস্তা, ভাসল সেতু

রানিবাঁধ থেকে রাইপুর যাওয়ার রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পার্থসারথি কুণ্ডু জানান, পথে পড়ে ধডাঙা গ্রামের জোড়। জোড়ের উপরে মাটি ফেলে অস্থায়ী একটা রাস্তা করা হয়েছিল।

রানিবাঁধ-রাইপুর রাস্তায় ধডাঙা জোড়ের উপরে ভাঙা রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

রানিবাঁধ-রাইপুর রাস্তায় ধডাঙা জোড়ের উপরে ভাঙা রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
রানিবাঁধ শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০১:৩২
Share: Save:

ঝিরঝির করে হচ্ছিল শুক্রবার রাত থেকেই। শনিবার ভোরে প্রায় ঘণ্টাখানেক মুষল ধারায় চলল বৃষ্টি। সকালে তোড়ে নামতে থাকা জল উড়িয়ে দিয়ে গেল ধডাঙা গ্রামের জোড়বাঁধের রাস্তা। সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল রানিবাঁধ-রাইপুরের। এ ছাড়াও শনিবার বৃষ্টিতে মুশকিলে পড়লেন দক্ষিণ বাঁকুড়ার কিছু কিছু জায়গার মানুষজন।

রানিবাঁধ থেকে রাইপুর যাওয়ার রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পার্থসারথি কুণ্ডু জানান, পথে পড়ে ধডাঙা গ্রামের জোড়। জোড়ের উপরে মাটি ফেলে অস্থায়ী একটা রাস্তা করা হয়েছিল। সেটিই এ দিন জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লোকজন প্রস্তুত রয়েছেন। জল কমলেই পারাপারের জন্য ফের অস্থায়ী রাস্তা করে দেওয়া হবে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা তীর্থ মাহাতো, পার্থ মাহাতো, গণেশ মাহাতোরা জানান, শনিবার ভোর চারটে থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয় রানিবাঁধের বিস্তীর্ণ এলাকায়। সকাল ৭ টা নাগাদ দেখা যায়, কিছুটা জল বেড়েছে ধডাঙার জোড়ে। রাস্তার উপর দিয়ে তখন খুব অল্প জলই বয়ে যাচ্ছিল। আধ ঘণ্টা পরে হঠাৎ প্রবল বেগে জল নামতে শুরু করে। সেই তোড়েই ভেঙে যায় রাস্তাটি। রানিবাঁধ-রাইপুর রাস্তা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়ে পড়ে।

ওই রাস্তায় খান পনেরো বেসরকারি বাস চলাচল করে। এ ছাড়াও প্রচুর ছোটগাড়ি আসে-যায়। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। রানিবাঁধ ও রাইপুরের দিক থেকে যাত্রী বোঝাই করে এসে বাস ধডাঙা জোড় সংলগ্ন জায়গা থেকে আবার ফিরতি পথ ধরে। খাতড়ার খড়িডুরি গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র মুর্মু বেসরকারি বাসে পায়রাগুড়ি গ্রামে যাচ্ছিলেন। বাসটি ধডাঙা জোড়ের কাছে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে ফিরে যায়। গন্তব্যে কী ভাবে যাবেন ভেবে কূল পাচ্ছিলেন না পূর্ণচন্দ্রবাবু। রানিবাঁধ, বীরখাম হয়ে গেলে প্রায় ২৫ কিলোমিটার ঘুরপথ। খাতড়া থেকে কাঁকড়াদাড়া, কুকুরাকন্দর, পিড়লগাড়ি মোড় ধরলে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটারের ধাক্কা।

একই রকমের সমস্যায় পড়েন ঝুমা সর্দার। তাঁর বাপের বাড়ি ধডাঙা গ্রামে। গ্রামের আধ কিলোমিটার দূরে পৌঁছেও ঢুকতে পারছিলেন না। বলছিলেন, ‘‘ও পারে ভাই নিতে এসেছে। কিন্তু জোড়ের বান পেরিয়ে কী ভাবে পার হব বুঝতে পারছি না।’’

হয়রান হন ঘোড়াধরা হাটে আসা লোকজনও। রাইপুরের গুনিয়াদা গ্রাম থেকে ঘোড়াধরা হাটে গবাদি পশু বিক্রি করতে এনেছিলেন সনৎ ডাঙ্গর, স্বপন মাকুড়েরা। তাঁরা জানান, সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ যখন পায়ে হাটে গিয়েছিলেন তখন সব ঠিকঠাক ছিল। ফেরার পথে আটকে পড়েছেন।

অন্য দিকে, রানিবাঁধের আকখুঁটা মোড়ের চৌমাথার দু’দিকের দু’টি কালভার্ট ভেসেছে বৃষ্টির জলে। একটি কালভার্ট মোড়ের পশ্চিম দিকে, অম্বিকানগর থেকে আকখুটা হয়ে রানিবাঁধ যাওয়ার পথে। অন্যটি উত্তর দিকে। খাতড়া থেকে রানিবাঁধ যাওয়ার রাস্তায়। কালভার্টের উপর দিয়ে জল বইতে থাকায় মোটরবাইক ও ছোট গাড়ি চলাচলে সমস্যা হয়েছে বলে এলাকার কিছু লোকজন দাবি করেছেন। তবে বিডিও (রানিবাঁধ) শুভদীপ পালিত বলেন, ‘‘কালভার্টের উপরে সামন্য জল উঠেছে। তাতে পারাপারের কোনও সমস্যা নেই।’’ তিনি জানান, ধডাঙা জোড়ের উপরে অস্থায়ী রাস্তাটি জলের তোড়ে কিছুটা ভেঙে গিয়েছে। পূর্ত দফতর সেটি মেরামত করে দেবে।

এ দিন রানিবাঁধে তালগোড়া গ্রামে কয়েকটি বাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় গ্রামবাসী দুপুরে রানিবাঁধ-খাতড়া রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে অবশ্য গ্রামের রাস্তা কেটে জল বের করা হয় বলে দাবি বাসিন্দাদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Roads Bridge Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy