থমকে: অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে গাড়ির সারি। বুধবার ভেলিয়ান মোড় এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তার মধ্যেও শোচনীয় দশা নলহাটি থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত অংশের। রাস্তায় যে পরিমাণ ধুলো উড়ছে, তাতে গাড়ি চালকের কার্যত কিছুই দেখতে পারছেন না। বাড়ছে দুর্ঘটনা। এই এলাকার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তা সংস্কারের আবেদন করেও সুরাহা হয়নি।
রাস্তা মেরামতির দাবিতে নলহাটি থানার ভেলিয়ান মোড়ের কাছে দু-তিনটি গ্রামের মানুষ জাতীয় সড়কে বাস রেখে বুধবার সকাল থেকে অবরোধ শুরু করেন। তার জেরে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে নলহাটি থানার আধিকারিকদের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কালাম, শেখ নেওয়াজ বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের আশ্বাসে এ দিন অবরোধ তুলে নিয়েছি। কিন্তু, আমাদের দাবি মেনে রাস্তায় জল ছেটানো এবং দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু না হলে আরও বড় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’’
গ্রামবাসীরা জানান, বেহাল রাস্তায় কোনও পিচের আস্তরণ নেই। নলহাটি থেকে কয়থা পর্যন্ত (আট কিলোমিটার) রাস্তায় অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। জাতীয় সড়ক যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। নিত্যদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। জাতীয় সড়কের পাশে অনেক বাড়ি ও দোকান। সেখানকার বাসিন্দাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। ধুলোর ফলে দরজা-জানলা খুলতে পারছেন না। বয়স্ক ও ছোটদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তাঁদের দাবি, যতদিন জাতীয় সড়ক মেরামত না হচ্ছে ততদিন স্থানীয় প্রশাসন রাস্তায় দুই বেলা জল দেবেন। এর ফলে ধুলো কমবে।
ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন, ‘‘শীতকালে করোনার প্রকোপ বাড়বে বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। আর এই ধুলো কি প্রশাসন বা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দেখতে পাচ্ছে না?’’ ধুলোর ফলে চাষেরও প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। নলহাটি ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ কর্মকার বলেন, ‘‘করোনা আবহে ধুলো মানব শরীরে ক্ষতিই করবে। এ ক্ষেত্রে মাস্ক পরে রাস্তায় চলাচল করলে ভাল। তা ছাড়াও ধুলোয় অনেকের অ্যালার্জি থাকে। রাস্তার পাশে বাড়ি থাকলে এই সময় দরজা-জানলা বন্ধই রাখতে হবে।’’
কয়থা হাইস্কুলের শিক্ষক কাজী নুদরত হোসেন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে রাস্তায় ধুলো আর গর্তে বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রাস্তা খারাপ হলে তো ঠিক হয়। কিন্তু মনে হয়না রাজ্য ও কেন্দ্রের কোনও নজর আছে আমাদের এই জাতীয় সড়কের উপরে।’’ নলহাটির বিধায়ক মইনুদ্দিন সামস জানান, সাংসদ শতাব্দী রায় এই সমস্যা নিয়ে লোকসভায় অভিযোগ করেছেন। তিনিও একাধিক বার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হচ্ছে না।
জাতীয় সড়কের আধিকারিক নিশিকান্ত সিংহের দাবি, রাস্তা সংস্কার করা হলেও অতিরিক্ত পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের জন্য খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত পণ্য নেওয়া বন্ধের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তা সংস্কারের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy