রেশন আনতে হয় এ ভাবেই। ছবি: কল্যাণ আচার্য
বছর সাতেক আগে দুনীর্তির অভিযোগে ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছিল লাভপুরের জামনা পঞ্চায়েতের ফিংতোর গ্রামের রেশন ডিলারকে। তাঁর কাছ থেকে জামনা, মামুদপুর, কেমপুর, কুস্তোর-সহ ১১টি গ্রামের বাসিন্দারা রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতেন। বিকল্প হিসেবে ৫ কিলোমিটার দূরে, কৈগড়া গ্রামের ডিলারের কাছে থেকে সাময়িক ভাবে রেশন সামগ্রী নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। আজও অভিযুক্ত রেশন ডিলারের ‘সানপেনশন’ প্রত্যাহার করা হয়নি। এলাকায় নতুন ডিলার নিয়োগ করাও হয়নি। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন লাভপুরের ১১টি গ্রামের মানুষজন। প্রশাসনের সব স্তরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কৈগড়া গ্রামের ওই রেশন ডিলারের আওতায় নিজস্ব এলাকার
কার্ড রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার। তার সঙ্গে অতিরিক্ত যোগ হয়েছে ফিংতোর রেশন ডিলারের আওতায় থাকা প্রায় চার হাজার কার্ড। বৃহস্পতি থেকে রবিবার পর্যন্ত ওই রেশন দোকান থেকে সামগ্রী বিলি করা হয়। এর মধ্যে শনি ও রবিবার বরাদ্দ ফিংতোর রেশন ডিলারদের আওতাধীন গ্রাহকদের জন্য। রবিবার আবার আধবেলা রেশন সামগ্রী দেওয়া হয়। এর ফলে দীর্ঘক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে সামগ্রী নিতে হয় গ্রাহকদের। না হলে রেশন সামগ্রী মেলে না বলে অভিযোগ।
জামনা গ্রামের স্কুলছাত্রী বৈশাখী বাগদি, অর্পিতা মণ্ডল বলে, ‘‘বড়রা সবাই চাষের কাজে ব্যস্ত থাকায় আমাদেরই রেশন আনতে যেতে হয়। রবিবার প্রচুর ভিড় হয় বলে আমরা শনিবার যাই। সেদিনও রেশন সামগ্রী নিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে স্কুলে যাওয়ার সময় পেরিয়ে যায়।’’ ওই গ্রামেরই বৃদ্ধা সরস্বতী বাগদি, প্রৌঢ়া শেফালি বাগদিরা বলেন, ‘‘বিলে মাছ ধরে আর শাক তুলে আমাদের সংসার চলে। পরিবারে রেশন আনার মতো কেউ নেই। তাই ৫ কিমি হেঁটে আমাদেরই রেশন সামগ্রী আনতে যেতে হয়। সেদিন আর শাক তোলা বা মাছ ধরা হয় না।’’ কেমপুরের মলয় সিংহ, মামুদপুরের প্রশান্ত মণ্ডলদের ক্ষোভ, সমস্যার কথা প্রশাসনের সকল স্তরে জানানো হয়েছে। কিন্তু সমাধানের কোনও ব্যবস্থা এই সাত বছরে হয়নি।
স্থানীয় জামনা নিত্যসঙ্ঘ মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী কো-অপারেটিভ লিমিটেডের সম্পাদিকা মামনি ঘোষ জানান, সঙ্ঘের পক্ষ থেকে রেশন বণ্টনের দায়িত্ব দেওয়া হলে তাঁরা যথাযথ ভাবে পালন করবেন বলে প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাড়া মেলেনি। কৈগড়া গ্রামের রেশন ডিলার বিকাশ মণ্ডলের দাবি, ‘‘এক সঙ্গে দু’জায়গার রেশন সামগ্রী বিলি করতে গিয়ে আমাকে প্রায়ই গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। খাদ্য সরবরাহ দফতরকে একাধিকবার সে কথা জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।’’ সংশ্লিষ্ট লাভপুর ব্লকের খাদ্য সরবরাহ পরিদর্শক প্রেমানন্দ দাঁ জানিয়েছেন, আইনি জটিলতার কারণেই নতুন ডিলার নিয়োগ করা যায়নি। তবে গ্রামবাসীরা লিখিত ভাবে তাঁদের সমস্যার কথা জানালে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিডিও (লাভপুর) শুভ্র দাস বলেন, ‘‘এই বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে খাদ্য সরবরাহ দফতরের সঙ্গে কথা বলে কী করা যায় দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy