বাঁ দিকে ভাদুর বাড়িতে ভিড়, ডান দিকে পোড়া বাড়ি থেকে তখনও বেরোচ্ছে ধোঁয়া। নিজস্ব চিত্র।
গ্রাম জুড়ে শোকের আবহ। জোড়া ক্ষতের জ্বালা সহ্য করতে হচ্ছে বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের বাসিন্দাদের। ছোটখাটো অশান্তি আগেও ঘটেছে গ্রামে। হয়েছে রক্তপাতও। কিন্ত সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে সোমবার রাতের বীভৎসতা। এমন ভয়াবহ দৃশ্য আগে দেখেননি বগটুইয়ের গ্রামের বাসিন্দারা। সোমবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পর থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে বগটুই। মঙ্গলবার সকালে ভাদুর দেহ পৌঁছয় তাঁর বাড়িতে। ভাদুকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে ভিড় ভেঙে পড়ে বাড়ির উঠোনে। আত্মীয়-পরিজনদের মধ্যে ওঠে কান্নার রোল।
অন্য দিকে, ভাদুর বাড়ি থেকে দুশো মিটার দূরে রাস্তার ওপারেও ছড়িয়ে রয়েছে ধ্বংসের চিহ্ন। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। এখনও কোনও কোনও জায়গা থেকে বেরোচ্ছে ধোঁয়া। কোথাও কোথাও পড়ে রয়েছে বোমার সুতলি। নিস্তব্ধতা আর আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা এলাকা। তার ছাপ পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখেমুখেও। গোটা গ্রাম জুড়ে এখন চলছে পুলিশের টহলদারি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এ যেন অন্য কোনও গ্রহের ছবি। চার পাশ এখন থমথমে বললেও কম বলা হয়। প্রশ্ন করলেই ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন বললেন, ‘‘গতকাল ভাদু খুন হওয়ার পর থেকেই গোটা এলাকার চেহারা বদলে গিয়েছিল। রাতে যা হল তা ভাবতে পারিনি।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, দুই শিশুও নিহত হয়েছে সোমবার রাতভর চলা হিংসায়। অনেকের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
নিহত ভাদুর ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ভাদুর ভাই বাবর শেখ খুন হন। তিনিও সক্রিয় ভাবে তৃণমূল করতেন। বাবরকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল ওই এলাকারই বাসিন্দা পলাশ শেখ, সোনা শেখ, লালন শেখ, সঞ্জু শেখ, মহি শেখ, হানিফ শেরা, চেরা শেখ-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সোমবার সন্ধ্যায় তাদের বিরুদ্ধেই ভাদুকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। তার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ বগটুই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy